গোয়েন্দা পুলিশের এসব অভিযানে বিপুল পরিমাণ টিসিবি ও ওএমএস’র ন্যায্য মূল্যের পণ্য সামগ্রী ও নকল ওষধ, হ্যান্ড স্যনিটাইজার, ভেজাল ব্লিচিং পাউডার, বিভিন্ন ব্রান্ডের নকল প্রসাধনী, মবিল, তেল, টাইলস, সিমেন্ট ও নকল ধান বীজ উদ্ধার হয়। এছাড়াও অবৈধ প্লাস্টিক কারখানা, সেমাই কারখানা, ভেজাল তেলের কারখানা, অনুমোদনহীন বেকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতায় চলতি বছরের ৩ এপ্রিল হতে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
উত্তম প্রসাদ জানান, করোনা ক্রান্তিলগ্নে সাধারণ মানুষ যাতে সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্যের ওএমএস ও টিসিবির পণ্য পেতে পারে, সেজন্য অবৈধ ডিলার ও মজুদদারসহ ভেজাল পণ্য সামগ্রী প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থেকে বিভিন্নস্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা পুলিশ। এসব অভিযানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করা হয়।
এছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে শুধু জুলাই মাসে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অসঙ্গতি থাকায় ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গ্রেফতার করা হয় এক ভূয়া চিকিৎসক ও তার সহযোগিসহ চারজনকে। বেশ কয়েকটি অনুমোদনহীন সেবা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়।
তিনি আরও জানান, গত এপ্রিল ও মে মাসে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ব্লিচিং পাউডার, চক পাউডার, নকল প্রসাধনী, নকল ধান বীজ জব্দ করার পাশাপাশি ৮৫ হাজার জরিমান করা হয়। ওই দুই মাসে অবৈধ প্লাস্টিক কারখানা, সেমাই কারখানা, ভেজাল তেলের কারখানা ও অনুমোদনহীন বেকারিতে অভিযানসহ টাস্কফোর্স-২ এর সাথে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে জরিমানা আদায় হয় ২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এর পরের মাসে বিভিন্ন অভিযান থেকে ২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়।
জুলাই ও আগস্ট মাসে চালানো অভিযানে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ভেজাল মবিল, ভেজাল তেল উৎপাদনে জড়িতদের কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং একটি দোকানে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া টিসিবির লোগো সংবলিত তেল রাখায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
করোনাকালে ডিবি পুলিশের এসব অভিযান এবং ওএমএস-টিসিবি’র পণ্য সামগ্রী উদ্ধার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের পাশাপাশি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যক্রম নগরবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়।
এ ব্যাপারে আরপিএমপি’র কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ বলেন, রংপুর নগরীর প্রতিটি মানুষ যাতে নিরাপদে, শান্তিতে নগরীতে বসবাস করতে পারে, সে লক্ষ্যে অন্যান্য পুলিশের বিভাগের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগও নিরলসভাবে কাজ করছে। করোনার এই সময়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ ২৮ লাখ টাকারও বেশি অবৈধ পণ্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে।