আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২২ এপ্রিল ২০২৫ ● ৯ বৈশাখ ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২২ এপ্রিল ২০২৫

বৈশাখে ‘কুয়াশাচ্ছন্ন’ পঞ্চগড়

মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩, বিকাল ০৬:৫১

Advertisement

পঞ্চগড়: বৈশাখের প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষ হাঁসফাঁস করছে। তবে পঞ্চগড় জেলায় মঙ্গলবার (২ মে) সকালে দেখা গেছে বিপরীত আবহাওয়া। সোমবার রাত থেকেই কুয়াশা দেখা গেছে এই জেলায়। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল পঞ্চগড়। সঙ্গে মৃদু বাতাসও ছিল। ফলে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হয়েছে। কুয়াশা ভেদ করে সূর্য দুয়েকবার উঁকি দিয়েছে ক্ষণিকের জন্য। সকাল ৯টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করেছে। তবে বেলা বাড়ার পর ধীরে ধীরে কুয়াশা কেটে গেছে। গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমে শীতকালের আবহাওয়াকে অনেকে প্রকৃতির খামখেয়ালি আচরণ বলে মনে করছেন।

স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ সোমবার রাত থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল পঞ্চগড়। অনেককে গরম কাপড় পরে বের হতে দেখা গেছে। মাঝে মাঝে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে। আজকের ভোরের দৃশ্যটা ছিল পুরোপুরি শীতকালের মতো। 

তারা বলছেন, প্রকৃতির এমন পরিবর্তিত রূপ দেখে অবাক হয়েছেন। গ্রীষ্মকালে এমন কুয়াশা প্রবীণরাও আগে দেখেননি। এর জন্য অবাধে বৃক্ষ নিধন, বেপরোয়া ইটভাটা স্থাপন, পরিবেশ দূষণ, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমাইয়া স্মৃতি বলেন, ‘আজকের ভোরের দৃশ্যটা ছিল পুরোপুরি শীতকালের মতো। হঠাৎ প্রকৃতির এমন রূপ দেখে অবাক হয়েছি। তবে আজকের ভোরটা ছিল উপভোগ করার মতো।’

কায়েতপাড়া এলাকার শাহজাহান আলী বলেন, ‘তীব্র গরমে শরীর জ্বালা করছে। রোদের সময় বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। তবে আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে।’

ফুটকিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে প্রাইভেট পড়তে যেতে হয়। এতদিন কুয়াশা পাইনি। আজকে কুয়াশা পেয়েছি। আমি জানি শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে, কিন্তু বুঝতে পারলাম না গরমের দিনে কেন কুয়াশা পড়লো।’

শহরের প্রবীণ ব্যক্তি আলাউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘গ্রীষ্মকালে এমন কুয়াশা আমি আগে কখনও দেখিনি।’

ময়দানদিঘি ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক শেখ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘বৃক্ষনিধন, বেপরোয়া ইটভাটা স্থাপন, পরিবেশ দূষণ, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার এমন রূপ দেখা যাচ্ছে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, ‘বাহ্যিক চোখে কুয়াশা মনে হলেও এটি আসলে ধূলিকণা। সারা দিন ভূপৃষ্ঠের ধুলোবালি আকাশে উড়ে রাতে জলীয়বাষ্প হয়ে যায়। যেগুলো মাটির উপরে থাকে। এটাকে কুয়াশা মনে হয়। পরিবেশ দূষণের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় এমন আবহাওয়া বিরাজ করে।’

মঙ্গলবার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মন্তব্য করুন


Link copied