লাইফস্টাইল ডেস্ক : অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন অনেকেই। আর এই করণে বেশিরভাগই বিভিন্ন ডায়েট অনুসরণ করেন বাড়তি মেদ ঝরাতে। তবে না জেনে বুঝে কখনো ডায়েট অনুসরণ করবেন না। যে কোনো ডায়েট মানার আগে অবশ্যই সেটি আপনার শরীরের জন্য উপযোগী কি না তা যাচাই করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডায়েট শুরু করার জন্য নতুন বছর একটা ভালো উপলক্ষ। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যতটা সহজ, বাস্তবায়ন করা ততটাই কঠিন। কিছু ভুল পদ্ধতির কারণে অনেকে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না। অনেকে খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করার সময় বাড়াবাড়ি রকমের পরিবর্তন করে ফেলেন। যেগুলো দু–এক দিন মেনে চলা যায়, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে মেনে চলা কঠিন। যে কারণে অধিকাংশ লোকজনই কিছুদিনের মধ্যেই লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যান। তাই লক্ষ্যগুলো এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যেন পূরণ করা সহজ হয়। কীভাবে লক্ষ্য ঠিক করবেন? জেনে নিন-
লক্ষ্য থাকুক অটুট
আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক অযৌক্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করি। পরিণতিতে ব্যর্থ হই। যেমন কেউ যদি লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, আমি নতুন বছর থেকে প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া শুরু করব, সেটা ভুল হবে। বরং তাকে ঠিক করতে হবে, নতুন বছর থেকে আমি দিনে দুই বেলা অবশ্যই শাকসবজি খাব। ফলে লক্ষ্য অনেক সুনির্দিষ্ট হবে। আর তা পূরণ করতেও সুবিধা হবে।
লিখে রাখুন
মৌখিক পরিকল্পনা করলে সহজে মনে থাকবে না। তাই কী করতে চান, লিখে ফেলুন। প্রথমেই কী পরিবর্তন চাই, সেগুলো অবশ্যই লিখিত আকারে থাকতে হবে। এবার ঠিক করুন আপনার টার্গেট কী? ওজন কমানো, রোগ সারানো নাকি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। এবার তালিকা করুন, এগুলোর জন্য কী কী অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কত সময় লাগবে, সেটি নির্ধারিত থাকতে হবে। তাহলেই আপনি সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।
ডায়েট কেন করবেন
আপনি কেন ডায়েট করতে চাইছেন, সেটা সঠিকভাবে জানা থাকা চাই। অনেকেই আছেন হুজুগে বা ঝোঁকের বশে যদি ওজন কমানোর মিশনে নামেন। দেখা যায় কিছুদিন পর সেটা পূর্ণ করা কঠিন হয়ে যায়। তাই নিজেকে যাচাই করুন, ডায়েট কি আপনি কারও কটু কথা শুনে করতে যাচ্ছেন, পরিস্থিতির শিকার হয়ে নাকি একান্তই নিজ উদ্যোগে ভালো থাকার কথা ভেবে? নিজের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে যদি লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, তাহলে অবশ্যই আপনি সঠিক রাস্তায় আছেন।
সু–অভ্যাসে সুস্থতা
সুস্থ জীবন-যাপন করকে চাইলে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের বিকল্প নেই। আর সে কারণেই আপনি যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, সেখানে পৌঁছাতে হলে অবশ্যই আপনাকে অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। একবারে তো আর অভ্যাস পরিবর্তন করা যাবে না। অল্প অল্প করে পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে।
তিন বেলা নয়, ছয় বেলা
একসঙ্গে বেশি পরিমাণ খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। তাই তিন বেলার খাবার পাঁচ থেকে ছয়টি ভাগে ভাগ করে খাওয়া ভালো। ব্যস্ততার কারণে যেটা আমাদের অনেকেই করতে পারি না। ওজন কমানো, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন কিংবা রোগমুক্ত থাকতে এ নিয়ম দারুণ টনিক হিসেবে কাজ করে। প্রথম লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন করার পরই এ লক্ষ্যকে টার্গেট করুন। এ অভ্যাস গড়ে তুলতে চাইলে অবশ্যই পচনশীল নয় ও সঠিক খাদ্যগুণ বজায় থাকে, এমন কিছু খাবার নিজের সঙ্গে বহন করতে হবে। সকাল ও দুপুরের মধ্যবর্তী সময়, দুপুর ও বিকেলের মধ্যবর্তী সময় হালকাপাতলা স্বাস্থ্যকর নাশতা করতে হবে। কারণ, দীর্ঘ সময় টানা না খেয়ে থাকলে বেশি শক্তি অপচয় হয় ও পরের বেলা বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
আরও যা করতে হবে
অল্প দূরত্বের রাস্তা হেঁটে যেতে চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একবারে এ অভ্যাস গড়ে তোলা কঠিন। সে জন্য প্রথম ১ সপ্তাহে ১০ মিনিট, তারপর ১ সপ্তাহ ১৫ মিনিট, এভাবে অভ্যাস আয়ত্ত করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
বাইরে বের হলে সামান্য গলা শুকিয়ে গেলেই কোমল পানীয়র বদলে সঙ্গে রাখা লেবুপানি, জিরাপানি বা বিভিন্ন ফ্রেশ ফলের জুস পান করতে পারেন। আর পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন। তৃষ্ণা না পেলেও কিছু সময় পরপর পানি পান করুন, এতে উপকার পাবেন।