স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, দূর্নীতি এবং দুঃসাশন মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন কেউ আমাদের চোখ রাঙ্গাবেন না, ভয় দেখাবেন না, আপনাদের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নাই। যে দলের নেতারা হাসতে হাসতে ফাঁসির পাটাতনের উপর দাঁড়াতে পারে, তাদেরকে ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই। তারা কখনো কোথাও কারো কাছে মাথা নত করেনি আল্লাহ ছাড়া। আমরা মাথা নত করবো শুধু আল্লাহ তায়ালার কাছে। আমরা ১৮ কোটি মানুষের মাথা সোজা করে দাড়াবার একটা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য আপনাদের সহযোগীতা চাই, ভালবাসা চাই পাশে চাই, সমর্থন চাই।
বুধবার(২৬ ফেব্রুয়ারী) বিকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে ডোমার উপজেলা পরিষদ মাঠে এক পথসভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। ডোমার উপজেলা জামায়াতের আমীর খন্দকার মোঃ আহমাদুল হক মানিকের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর দিনাজপুর অঞ্চল জামায়াতের পরিচালক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, অঞ্চল টিম সদস্য মোঃ আব্দুর রশীদ, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার।
আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, ৫ আগষ্টের পর খুনী, জুলুমবাজ, স্বৈরাচারী, গুম, হত্যাকারী ও ধর্ষকরা পালিয়ে গেছে। এখন আমরা যারা আছি স্বৈরাচারের নির্যাতনের শিকার হওয়া মানুষজন। তিনি বলেন স্বৈরাচারের নির্যাতনে আমরা অসংখ্য সহকার্মীকে হারিয়েছি, অনেকে পঙ্গু হয়েছে, অনেকে আহত হয়েছে। সেই কষ্ট বুকে নিয়ে আমরা আছি।
তিনি বলেন আমাদের কেউ কেউ ভয় দেখায়, তারা বলে যে এই হলে ওই হলে আবার আপনাদের ফাঁসি হয়ে যাবে। আরে ভাই কাকে ফাঁসির ভয় দেখান। যারা শহীদ হওয়ার জন্য উন্মুখ। এই ভয় করলে আমাদের নেতাদের ফাঁসির পাটাতনে দাঁড়াতে হতো না। সুতরাং আমাদের ফাঁসির ভয় দেখাবেন না।
তিনি বলেন আগের চাঁদাবাজরা গিয়েছে। এখন সর্বস্তরের মানুষ বলছে শুধুৃ হাত বদল হয়েছে। মানুষ বলছে চাঁদার রেড একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ী বলছেন, আগে মাসে মাসে ঐই লুটেরা চাঁদা নিতে আসতো, এখন যারা আসে তারা বলে র্ডে বাড়িয়ে দেন। ব্যবসায়ীরা জিজ্ঞেস করেছিল রেড কেন বাড়াতে হবে। তখন ওরা বলে স্বৈরাচাররা তো সাড়ে পনের বছর খেয়েছে, আমাদের কপালে কয়দিন আছে জানিনা। যে কয়দিন আছি সে কয়দিন আমাদের পেটটা ভরিয়ে নিতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনারা গর্বিত উত্তরবঙ্গের মানুষ। এখন সন্তানরা যে শ্লোগান দেয় প্রথম আপনাদের নামটি আসে সে রংপুরের আবু সাঈদ। শহিদরা জাতীয় সম্পদ। আমরা দলের ভিত্তিত্বে ভাগ করতে চাইনা। আমরা শহিদদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। শহিদদের আমরা মাথার তাজ বানিয়ে রাখতে চাই।
আমীরে জামায়াত বলেন, আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যেখানে চাঁদাবাজ সেখানেই যুদ্ধ, যেখানে দখলদার সেখানে লড়াই। আমাদের এই যুদ্ধ অব্যহত থাকবে। ৫ আগষ্টের পর দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি বলে আমাদের এই যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের আ্ইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অবস্থায় যদি বাংলাদেশে নির্বাচন হয় তাহলে নির্বাচনকে কবর দেওয়া হবে। চরম বিশৃঙ্খলা হবে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা এটা চাইনা। আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে, দেশে আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগনকে স্বস্তির সাথে তার ভোট প্রয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে।
আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন সর্ম্পকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশনে জনপ্রতিনিধি না থাকায় প্রতিদিন মানুষজনকে দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। আমাদের রাজনীতি জনগনের দূর্ভোগ বাড়াতে নয়। আমাদের রাজনীতি দূর্ভোগ কমানোর জন্য। অতএব সকল যুক্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অতি দ্রুত দিতে হবে। তবে অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের জন্য গ্রহনযোগ্য সংস্কার শেষে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আলম, সহকারী সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ছাদের হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু, ইসলামী ছাত্রশিবির জেলা শাখার সভাপতি তাজমুল হাসান সাগর প্রমুখ।