ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরনের ২৫দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সেজান আলী, মুরাদ সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার(২০ মার্চ) গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেহরির সময় সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকায় অপহরণকারী সেজান আলী বাড়ীর পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে মিলনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
এতে ভোরে বিক্ষুব্ধ জনতা অপহরণকারী সেজানের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে গেলেও তারদের আগুন নেভাতে বাঁধা দেয় বিক্ষুদ্ধরা।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মিলনের পরিবারকে আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।
ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণে ঘটনায় আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবা করলে ও তাদের দেখানো মতে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। এছাড়াও পরে বৃহস্পতিবার একটি মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
জানা যায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। গত ২৩ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে ৮ টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পিছনে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েই নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১ টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠো ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘন্টার মধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন আরও বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিনদিন পরে ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র। রোববার (৯ মার্চ) রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় অপহৃত মিলনের বাবা পানজাব আলী।
২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও এর চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে।
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও এর চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। ঘটনার দিন রাত ১ টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠো ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। পরে কয়েক দফায় মুক্তিপনের ২৫লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় অপহরণকারীরা।
এদিকে মিলনের পরিবার জমি জায়গায় বিক্রি ও ধারদেনা করে ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে জীবিত না পেয়ে কান্নার আহাজারীতে এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।