আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৩ এপ্রিল ২০২৫ ● ২০ চৈত্র ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৩ এপ্রিল ২০২৫
শুভেচ্ছাবার্তা:
উত্তর বাংলা ডটকম পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক ।

বন্দিদের একনজর দেখতে ঈদের দিন কারাগারে স্বজনদের দীর্ঘ লাইন

সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, বিকাল ০৫:৫০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  সারাদেশের কারাগারগুলোতে ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করছেন প্রায় ৭০ হাজার বন্দি। সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে ঈদের নামাজ আদায়, দিনভর বিশেষ খাবার এবং বন্দিদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের আনন্দঘন মুহূর্তের আয়োজন। সুযোগ পাচ্ছেন স্বজনদের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাতেরও।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকে দুবছরের সন্তান কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আসমা বেগম। কারাবন্দি স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে সকাল ৮টায় আসেন তিনি। সকাল ১০টার দিকে শেষ হয় অপেক্ষার প্রহর।
 
আমিনা বেগম নামে এক নারী এসেছেন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। মায়ের মন ঈদের দিন ঘরে থাকতে পারেনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমিনা বলেন, ‘আমার ছেলে বন্দি। গত বছরও ঈদের দিন বাড়িতে ছিল। ছেলে জেলে ঈদ করবে, আমার মন তো বাড়িতে থাকে না। তার জন্য ছুটে এসেছি।’
 
কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অপেক্ষমাণ প্রত্যেকের গল্প একই, কারাবন্দিদের স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যরা ছুটে এসেছেন ঈদের দিনে সাক্ষাৎ করতে।
 
বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছেন স্বজনরা। স্বজনদের পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী, আবার বন্দির পাশেও নিরাপত্তা বেষ্টনী। মধ্যখানে চোখে দেখা ও কথা বলার যতটুকু ফাঁকা, তা দিয়েই স্বজনরা কথা বলছেন বন্দির সঙ্গে। বন্দিদের কান্না করতে দেখা গেছে, চোখের জলে ভাসেন স্বজনরাও।

একজন বন্দির সঙ্গে স্বজনরা সাক্ষাতের সময় পান আধা ঘণ্টা। কিন্তু স্বজনদের জন্য এই সময়টা যেন ফুরিয়ে যায় চোখের পলকে। শেষ হয় না কথা বলা। 
কারাগারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সদস্য জানান, ঈদের দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের ভিড় আরও বাড়বে। আর ঈদের পরদিন ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে যায়।
 
সব বন্দির পরিবার কি আসেন? এমন প্রশ্নে সেই নিরাপত্তা কর্মী জানান, এমন অসংখ্য ব্যক্তি কারাগারে আছেন যাদের দেখতে পরিবারের সদস্যরা আসেন না। কারও কারও তো পরিবারই নেই।
 
কারা অধিদপ্তরের সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশের কারাগারগুলোয় ৪২ হাজার ৪৫০ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে বর্তমানে বন্দি আছেন মোট ৬০ হাজার ৯১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ বন্দি ৫৮ হাজার ৮৯০ ও নারী রয়েছেন ২ হাজার ২৪ জন। বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৫৭ জন, কাশিমপুরে চারটি কারাগারে ৬২ জনসহ ঢাকা বিভাগের অন্যান্য কারাগার মিলিয়ে মোট ১২৫ জন ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছেন।
 
কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সকালে দেশের সব কারাগারেই নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। সেইসঙ্গে দিনভর থাকবে বন্দিদের অংশগ্রহণে নানা আয়োজন। হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
 
সন্ধ্যায় কারারক্ষী ব্যারাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যার পর স্টাফদের সন্তানদের অংশগ্রহণে কবিতা আবৃত্তি ও গানের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ঈদের তিনদিন পরিবারের সঙ্গে একটি বিশেষ সাক্ষাতেরও সুযোগ পাবেন সব কারাবন্দি।
 
বন্দিদের জন্য ঈদের দিনের খাবারে থাকছে বৈচিত্র্য। সকালে নাশতা হিসেবে দেয়া হয় পায়েস ও মুড়ি। দুপুরের খাবার পোলাও, গরু বা খাসি, রোস্ট, মিষ্টি, কোমল পানীয় ও সালাদ। রাতে দেয়া হবে সাদা ভাত, মাছ, বুটের ডাল ও ডিম।
 
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুধুমাত্র ঈদের পরদিন বাসায় রান্না করা খাবার (পোলাও, সাদাভাত, মাছ, মাংস, খিচুড়ি ও রুটি) বন্দিদের জন্য কারাভ্যন্তরে দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন


Link copied