রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ১৭ জন কৃষককের প্রায় ২৫ বিঘা পাকা গমের ক্ষেত আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতরের দিন বিকালে উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের দক্ষিণ বনগাঁও গ্রামের একটি ফসলের মাঠে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,বনগাঁও গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন তার পাকা গম জমি থেকে কেটে বাড়ি নিয়ে যায়। ঘটনার দিন জমিতে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত গমের ডাটা ছাই করে জমিতে সার হিসাবে ব্যবহারের জন্য আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আর তখনই ঘটে বিপত্তি। খরা আবহাওয়া ও হালকা বাতাসে সেই আগুন নিমিষেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পাশে থাকা ১৫-২০ জন কৃষককের প্রায় ২০ থেকে ২৫ বিঘা পাকা গমের ক্ষেতে সে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ঘন্টা খানেকের ব্যবধানে প্রায় ৩ একর গমের ক্ষেত সব আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। ঈদ আনন্দের পরিবর্তে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরিবারে বিরাজ করছে ফসল হারানোর শোক।
খবর পেয়ে রানীশংকৈল উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের একটি দল স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে কৃষক ফিরোজ আলম,আব্বাস আলী,গোলাম রব্বানী, কামরুজ্জামান ও আব্দুল হালিমসহ প্রায় ১৫-২০ জনের ২০ থেকে ২৫ বিঘা জমির সব গম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফিরোজ আলম বলেন, হতভম্ব হয়ে বলেন, হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ঘরে তুলবো কিন্তু একজনের ভুলের কারণে সব শেষ হয়ে গেল। আরেক কৃষক গোলাম রব্বানী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি গতকাল সারা দিন শ্রমিক লাগিয়ে জমি থেকে গম কাটিয়েছি।ভেবেছিলাম ঈদের পরের দিন ফসল ঘরে তুলবো। গম বিক্রি করে সংসারের অভাব মিটাবো।কিন্তু চোখের সামনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল। শুধু অসহায় হয়ে পুড়ে যাওয়া ফসলের ছাই দেখলাম। জানিনা এখন আমরা কিভাবে বাঁচবো।
বনগাঁও ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রায় ৯ একর জমির গমের ফসল পুড়ে গেছে এবং কৃষকেরা কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়লো। এই ঘটনায় দিশেহারা স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব না।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহীদুল ইসলাম বলেন, সাথে সাথে ওই ব্লকের উপ সহকারী কৃষি অফিসার সাদেকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যান্ত কষ্টদায়ক। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে রয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের কৃষি অফিস থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।