নিউজ ডেস্ক: অনলাইনে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সৌদি আরব ঈদুল ফিতরের সময়-তারিখ ভুল করেছে। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষেল কাছ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
গত শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সৌদি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ওইদিন আরও কয়েকটি আরব দেশ চাঁদ দেখার দাবি করে এবং রোববার (৩০ মার্চ) ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করে।
আবারও কয়েকটি দেশ চাঁদ দেখা যায়নি বলে জানায় এবং সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে বলে জানায়। যেমন মিশর, জর্ডান ও সিরিয়াসহ কয়েকটি সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।
এই দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত না মেনে সোমবার ঈদ উদযাপন করেছে। এছাড়া শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান ও ওমানের ইবাদি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ (ওমানে ৪৫% ইবাদি, ৪৫% সুন্নি, ৫% শিয়া) সোমবারই ঈদ পালন করেছে।
গত শনিবারই সৌদি কর্তৃপক্ষের চাঁদ দেখার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউ আরবের এক প্রতিবেদন মতে, রোববার (৩০ মার্চ) কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি কর্তৃপক্ষের চাঁদ দেখায় ভুল হয়েছে।
ফলে তারা একদিন আগেই ঈদের তারিখ ঘোষণা করেছে। এই ভুলের জন্য এসব প্রতিবেদনে সৌদিদের পক্ষ থেকে ‘কাফফারা’ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে।
বিশ্বের অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ রোববার ঈদ উদযাপনের সৌদি সিদ্ধান্ত প্রত্যক্ষ করেন। তারা বলছেন, আগের শনিবার (২৯ মার্চ) চাঁদ দেখা ‘অসম্ভব’ ছিল।
আবুধাবিভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনোমিকাল সেন্টার জানায়, পূর্ব গোলার্ধ থেকে যেকোনো ধরণের পদ্ধতি ব্যবহার করে শনিবার চাঁদ দেখার কোনো সুযোগ ছিল না।
সৌদি জ্যোতির্বিদ বদর আল-ওমাইরা গালফ নিউজকে বলেন, চাঁদ দেখা অসম্ভব ছিল। কারণ শনিবার সূর্যগ্রহণ ছিল। যার ফলে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত চাঁদ দেখা সম্ভব হয়নি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক নিউ ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ইমাদ আহমেদ বলেন, ইসলামি মাসগুলো চাঁদের নতুন পর্যায় থেকে নয়, বরং অর্ধচন্দ্রের পর্যায় থেকে শুরু হয়।
অনেকেই মনে করছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ফলে লক্ষ লক্ষ মুসলিম একদিন আগেই রোজা রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে একদিন রোজা ভাঙার জন্য তাদের ‘কাফফারা’ দেয়া উচিৎ।
সৌদি কর্তৃপক্ষ এর আগেও এমন ভুল করেছিল বলে নিউ আরবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন মতে, ২০১১ সালে সৌদি চাঁদ দেখা কর্তৃপক্ষ শনি গ্রহকে চাঁদ ভেবে ভুল করেছিল। এরপর ২০১৯ সালেও এমন একটি ঘটনা ঘটে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ উভয় ভুলই অস্বীকার করে।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি উৎসবে চাঁদ দেখা নিয়ে মাঝে মাঝে বিতর্ক হয়। এক্ষেত্রে কিছু দেশ জ্যোতির্বিদ্যার গণনা ও টেলিস্কোপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আবার কেউ কেউ জোর দিয়ে বলে, চাঁদ অবশ্যই খালি চোখে দেখা যেতে হবে।