বিশেষ প্রতিনিধি,নীলফামারী॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদলের নেতাকর্মী এবং শিক্ষার্থীদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার(৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কলেজের হলরুমে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ছাত্র দলের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় সৈয়দপুর সরকারি কলেজের আশির দশকের ছাত্রদলের আহ্বায়ক সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আক্তার বলেন, ২৪শে নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে ১৯৭১ সালে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ পালিয়েছে। এতে দেশ অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে, তারা ৭১ এর পাকিস্তানের দোসর। তাই তারা স্বাধীনতাকে মেনে নিতে চায় না।
ছাত্রদলের সৈয়দপুর সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সিহাব ইসলাম সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক হৃদয় প্রামানিক সঞ্চালনা করেন।
প্রায় একযুগ পর এ অনুষ্ঠানে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পরেন। একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় ও কলেজে অধ্যায়নকালীন সময়ে রাজনৈতীক কর্মকান্ডের স্মৃতি চারণ করে আবেগাপ্লুত হন তারা।
শাহিন আক্তার বলেন, উত্তরের ঐতিহ্য এই বিদ্যাপীঠটি ছিল রাজনৈতীক চর্চার একটি আতুরঘর। এখানে শিক্ষার্থীরা নব উজ্জিবনী শক্তি নিয়ে রাজনীতি করেছে। ছাত্রদলের ইতিবাচক কর্মকান্ডের নবীনরা উচ্ছ্বসিত হয়ে দলে দলে যোগ দিয়েছিল। এতে ছাত্রদলের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট স্বর্ণযুগে অবগাহন করে। ছাত্রদল সংক্ষিপ্ত জেসিটি নামে দেশব্যাপী ব্যাপক সমাদৃত হয়েছিল তৎকালীন নতুন প্রজন্মের কাছে। ছাত্র রাজনীতিতে নবজাগরণ ঘটিয়ে স্বৈরশাসক এরশাদ পতনের ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদ হাসিনা পতনের আন্দোলনেও ভুমিকা রাখে ছাত্রদল।
আশির দশকের ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক বিএনপির অন্যতম নেতা শওকত হায়াত শাহ বলেন, এ জনপদের রাজনীতিতে ব্যাপক অবদান রয়েছে এ কলেজের অধ্যয়নরতদের। যারা ছাত্রদলের সাথে জরিত ছিল। যার বার্তাবহন করছে কলেজটির দৃশ্যমান আমতলা চত্ত্বর, শহীদ মিনারসহ পুরো কলেজ ক্যা¤পাস। দেশের স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে মুখরিত থাকত এ প্রাঙ্গণ। এতে রেশ ছড়িয়ে পড়ত শহরে। সকল দল একই সাথে মিটিং মিছিল করত।
এ কলেজে নব্বই দশকের ছাত্রদলের সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ এখানে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চর্চা স্তব্ধ করে রেখেছিল। তারা পুলিশ লেলিয়ে দমন, পীড়নের মাধ্যমে অবরুদ্ধ করছিল ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক কর্মসূচি। তারা মিছিল করলেই চালাত হামলা। আজ ২৪শে ছাত্র জনতার আন্দোলনে তারা পালিয়ে যাওয়ায় মুক্ত রাজনৈতিক চর্চার অবস্থান তৈরি হয়েছে। তবে এর ভিক্তি পোক্ত করতে দরকার ছাত্র সংসদ নির্বাচন। যা ১৭ বছর ধরে বন্ধ আছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মুক্ত রাজনৈতিক চর্চা, ন্যায় কথা বলার অধিকার ফিরে পাবে। তাই দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, আগে ডিগ্রি পাশ ছাড়া ছাত্র দলের নির্বাহী সদস্য হতে পারত না। দলের সবাই ছিল ইউনিক। ছিল সম্মান, সৌহার্দ্য ও পার¯পরিক সম্প্রীতি। এই ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য অবশ্যই বিএনপির কান্ডারী ও তরুণদের উজ্জিবনী শক্তি তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। ছাত্র দলের নেতারা ছিলেন নবীন ছাত্রদের আইকন।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সৈয়দপুর সরকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলজার রহমান, ছাত্রদলের সাবেক নেতা শফিকুল ইসলাম জনি, শাহিন আক্তার, মোকছেদ আলী, সুজন সরকার, এম এ পারভেজ লিটন, মোশাররফ হোসেন মিঠু, শফিকুল ইসলাম বাবু, এম নাইম সরকার, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম রাব্বিসহ কলেজ শাখার অন্যন্য নেতৃবৃন্দ।