নিউজ ডেস্ক: দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত, এরকম আবহাওয়ায় দিনাজপুর অঞ্চলে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের মাঝে বাড়ছে ডায়রিয়া, পেটব্যথা, জ্বর-সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড়। জনবল সংকট ও রোগীর বাড়তি চাপের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানা গেছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এমন হচ্ছে।
ফুলবাড়ী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে মঞ্জুরকৃত পদের সংখ্য ১৮২। কর্মরত রয়েছেন ১১৭ জন। ৬৫টি পদ শূন্য। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক ২৭ জনের মধ্যে কর্মরত ৯ জন, ১৮টি পদশূন্য। তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (সব) ৬৯ জনের স্থলে রয়েছেন ৩৬ জন, বাকি ৩৩টি পদশূন্য। সিএসসিপি (তৃতীয় শ্রেণি) ২৬ জনের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন, ২টি পদ শূন্য। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ২১ জনের স্থলে রয়েছেন ১১ জন, ১০টি পদ শূন্য। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির এমএসসি হোমিওপ্যাথি একজন কর্মরত। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (নার্স মিডওয়াইফ) ৩৭ জন রয়েছেন। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিউট্রিশনিস্ট একজন।
গত ১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ হাজার ৪১৪ জন, জরুরি বিভাগে ২ হাজার ৪৮৩ এবং আন্তঃবিভাগে ১ হাজার ৭১৭ জন। গত রবিবার বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৫৩, জরুরি বিভাগে ১১৯ এবং আন্তঃবিভাগে ৬৪ জন। এতে করে গড়ে বহির্বিভাগে ৫০০, জরুরি বিভাগে ১৫০-২০০ ও আন্তঃবিভাগে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মেয়ের চিকিৎসা নিতে আসা শ্যামলী রানী বলেন, দিনের বেলা গরমে ফ্যান চালাতে হচ্ছে আর রাতে কম্বল-কাঁথা গায়ে দিতে হচ্ছে। এই আবহাওয়ার কারণে মেয়ে কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছে।
রোগী রোকেয়া বেগম বলেন, পেটব্যথার সঙ্গে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। নিজ গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে স্যালাইন ও ট্যাবলেট কিনে খাওয়ার পরও কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে এসেছি।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান জানান, এসময়ে আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে ডায়রিয়া, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি-কাশির রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। আজ (মঙ্গলবার) হাসপাতালে আমি ছাড়া তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন। এ ছাড়াও জনবল সংকট রয়েছে। স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকসহ হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এই সময়ে রোদে প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ায় ভালো এবং বাইরের কোনো খাবার না খাওয়ায় ভালো। আজকে রোগী ভর্তি রয়েছে ৬০-৭০ জন। বহির্বিভাগে সোমবারও সাড়ে ৫৫০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।