নিউজ ডেস্ক: নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের লালমনিরহাটে নির্মিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান ঘাঁটি? এই আলোচনা এখন তুঙ্গে সমগ্র ভারতজুড়ে, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর যেনো রাতের ঘুম হারাম হবার দশা। দ্যা ইকোনমিক টাইমসসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি বেশ রং ছড়িয়ে প্রচার করা হয়। এমনকি পালকি শার্মাকেও টেলিভিশনের পর্দায় কথা বলতে দেখা যায় এই ইস্যুতে। তবে সত্যিই কি বাংলাদেশে নির্মাণ হচ্ছে এই বিমানঘাঁটি? ‘যার বিয়ে তার খবর নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।’ এই প্রবাদের মতই যেনো ভারতীয়দের বর্তমান অবস্থা। লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কিছু না বললেও অযথা রং ছড়িয়ে এটি নিয়ে যেনো বাড়াবাড়ি করতেই হবে দাদাবাবুদের। এবার ভারতের এই অতিউৎসাহী আচরণ নিয়ে কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান।
এই বিশ্লেষক সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরেছেন লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণের বিষয়ে ভারতীয়দের এত মাথাব্যথার কারণ। ভারতীয় মিডিয়াগুলোর ভাষ্যমতে লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে চীন আর পাকিস্তান। ড. জাহেদ এর মতে, বাংলাদেশ সরকার যদি লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণ করতে চায় তাহলে করে ফেলা উচিত। কারণ, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তারা কোথায় কি নির্মাণ করবে বা কার সাহায্য নিয়ে নির্মাণ করবে এই জবাবদিহিতা ভারতকে দিতে বাধ্য নয়।
ডা. জাহেদুর রহমান তার আলোচনায় তুলে ধরেন হাসিনা সরকারের সময়ই লালমনিরহাটের এই অঞ্চলে বিমানঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। আর লালমনিরহাট থেকে ভারতের চিকেনস নেক খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় ভারত সরকার এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছেন বলে তার আলোচনায় তুলে ধরেন এই বিশ্লেষক। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফর করেছেন আবার চলতি মাসেই বাংলাদেশ সফর করবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব ও মন্ত্রী দুজনই। তাই ভারতের আশংকা আরো বহুগুনে বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন ড. জাহেদ।
তার মতে, বাংলাদেশ যদি সত্যিই চীন ও পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণ করতে চায় তাহলে এটি ভালো সিদ্ধান্ত। এর কারণ হিসেবে তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অবস্থান ও পাকিস্তানের টেকনিক্যাল দিকগুলো তুলে ধরেন। এই বিশ্লেষকের মতে বাংলাদেশ যদি চায়না ও পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে এই বিমানঘাঁটি নির্মাণ করে এরপরও ভারতের দাদাবাবুরা তাতে বাঁধা দেবেই। এর উদাহরণ স্বরপ তিনি তুলে ধরেন হাসিনার সময় বাংলাদেশ চীনের কাছে দুইটি পুরোনো সাবমেরিন কিনেছিলো যা হুমকি হিসেবে নিয়েছিলো ভারত, এরপর তারা মিয়ানমারকে সাবমেরিন উপহার হিসেবে দেয়।
বাংলাদেশ সামরিক শক্তিতে এগিয়ে যাক এটি কখনোই চায় না আমাদের পার্শ¦বর্তী দেশ ভারত। তারা সবসময়ই ভয়ে থাকে বাংলাদেশ নিয়ে। বিশেষ করে শিলিগুড়ি চিকেনস নেক নিয়ে বেশি চিন্তিত ভারতের দাদাবাবুরা, এমন মন্তব্যও করেন ডা. জাহেদ উর রহমান। এই বিশ্লেষকের মতে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে তাতে আমাদের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। তাই লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণ করে নিজেদের প্রস্তুতি নিজেদের রাখার পরামর্শ দেন তিনি।