বিশেষ প্রতিনিধি,নীলফামারী॥ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় কালিগঞ্জ বাজারে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার(১০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কালিগঞ্জ বাজারে বণিক সমিতির ব্যানারে ওই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শফিউর রহমান নামের এলাকার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ তুলে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
কালিগঞ্জ বাজারে জলঢাকা-ডিমলা সড়ক অবরোধ করে ঘন্টাব্যাপী ওই কর্মসূচি চলাকালে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে ওই সড়কে। এসময় সড়কের দুই ধারে যানবাহনের দীর্ঘ সারি আটকে থাকে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, শফিউর রহমান বিগত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকান্ডে বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
সমাবেশে কালিগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তৃতা দেন গোলনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার, বনিক সমিতির সহসভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, দপ্তর সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
গোলনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘শফিউর রহমান সাদেক বিএনপির সদস্য নন। তিনি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নাম ভাঙিগে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার নিজের কোনো জমি বা ব্যবসা নেই। চাঁদাবাজি তার মূল ব্যবসা। অতি সম্প্রতি সে চাঁদা না পেয়ে কালিগঞ্জ বাজারের পাঁচজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন’।
তিনি বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় দায়ের হওয়া একটি চাঁদাবাজির মামলায় শফিউর রহমান ২০ নম্বর আসামী। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ওই মামলাটি হয়। মামলা নম্বর ২৪। অথচ এই আসামী বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছেন’।
শফিউর রহমানের দায়ের করা মামলার এক নম্বর আসামী কালিগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম সাদেকের বিরুদ্ধে জলঢাকা থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দেয় ভুক্তভোগি এক ব্যবসায়ী। কিন্তু ওই মামলাটি এখনো রেকর্ড না করে সাদেকের দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি রেকর্ড করা হয়’।
এ বিষয়ে কথা বললে জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘একসঙ্গে দুইটি মামলা পেয়েছি। একটি রেকর্ড করা হয়েছে, অপরটি প্রক্রিয়াধীন আছে। বিষয় দুটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে কথা বললে শফিউর রহমান বলেন, ‘জুয়া খেলায় প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি এখন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়। আমি বিএনপি করি, বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের পক্ষে কথা বলার কারণে সাবেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে।