নিউজ ডেস্ক: সোমবার (১৪ এপ্রিল) সিঙ্গাপুরে চতুর্থ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব লুক গোহ নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার এবং নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উভয় পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সংযোগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, কৃষি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যটন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলোও আলোচনায় স্থান পায়।
আলোচনায় একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চূড়ান্ত করার বিষয়ে চলমান আলোচনার বিষয়টি বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে। উভয় পক্ষ ২০২৬ সালের মধ্যে চুক্তিটি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
শুল্ক সহযোগিতা চুক্তি, দ্বৈত কর পরিহারের জন্য সংশোধিত প্রোটোকল, ফৌজদারি বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি এবং পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সমাপ্তির লক্ষ্যে কাজ করতেও উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, পাটজাত পণ্য এবং পাদুকার মতো উচ্চমানের এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের পণ্যের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বাংলাদেশের খ্যাতি তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের এই খাতে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান যাতে আরও সুষম বাণিজ্য সম্পর্ক অর্জন করা যায়।
সিঙ্গাপুরকে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিশেষ করে জ্বালানি খাত এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও বেশি সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। আলোচনায় কৃষি প্রযুক্তি, কৃষি-সরবরাহ, চুক্তিবদ্ধ কৃষি এবং পর্যটন অবকাঠামোতে সম্ভাব্য সহযোগিতার উপরও আলোকপাত করা হয়।
উভয় পক্ষই সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা স্বীকার করে এবং প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগসহ মানবসম্পদ উন্নয়নে ভবিষ্যতের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করে। বাংলাদেশে টেকসই জ্বালানি উৎপাদন জোরদার করার জন্য বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরিতে সিঙ্গাপুরের সহায়তাও কামনা করেন পররাষ্ট্র সচিব।
আসিয়ানের একটি সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং আসিয়ান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং আঞ্চলিক ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত(আরসিইপি) তে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে।
জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নসহ আঞ্চলিক বিষয়গুলিও আলোচনায় উঠে আসে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র সচিবকে পরবর্তী এফওসির জন্য ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান।