পঞ্চগড় প্রতিনিধি: নিষিদ্ধ হওয়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের সাতখামার এলাকায় আবারও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অভ্যুত্থানে গত ৫ আগষ্ট বিক্ষুব্ধ জনতা প্রথম অগ্নিসংযোগ করে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দিনগত গভির রাতে জেলার আটোয়ারী উপজেলার বোদা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতখামার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এই অগ্নিসংযোগে বাড়ির প্রাচীর সংলগ্ন একটি খড় ও খড়ি রাখার ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর বোদা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে সাদ্দামের বাড়ির অগ্নিকান্ডের একটি ভিডিও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ফেইসবুক পেজে শেয়ার করে সন্ত্রাসীরা আবারো আগুন দিয়েছে বলা হয়েছে। একই সাথে তার পরিবারের সদস্যরা কোনভাবে জীবন রক্ষা পেয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
অগ্নিকান্ডের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির প্রাচীর সংলগ্ন একটি খড় ও খড়ি রাখার ঘরে অগ্নিকান্ডের খবর শুনে তারা ঘটনাস্থলে পৌছে প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ৩০ ফিট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফিট প্রস্থের টিনশেডের ঘরটিতে খড় ও খড়ি রাখা ছিলো। মধ্য রাতে ওই ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে প্রতিবেশি ও স্থানীয়রা ছুটে আসে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়।
সাদ্দাম হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, মধ্য রাতে কে বা কারা আমাদের খড়ের ঘরে আগুন দেয়। প্রতিবেশিরা আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার করে। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই খড়ের ঘরে ১০ বিঘা জমির খড় রাখা ছিল। আমার স্বামী ৩ বছর ধরে বিছানায় পড়ে রয়েছে। ৫ আগষ্টে পুড়ে যাওয়া ঘরের কয়েকটি রুম আমরা সংস্কার করে বসবাস করছি। খড়ের ঘরটি আমাদের ঘর থেকে দূরে ছিল। তবে আমরা এখন খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা চাই প্রশাসন এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্ত করে কারা আগুন দিয়েছে তা খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
বোদা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর রায়হান ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির সংলগ্ন তাদের খড় ও খড়ি ঘরে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দুটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ১ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে হিসেব করেছি। তবে আগুনের সূত্রপাত এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সরকার গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত ৫ আগষ্ট নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে পুড়ে যায় পুড়ো বাড়ি। পরে সাদ্দামের মা, অসুস্থ্য বাবা ও বড় ভাই বাড়ির ৩টি ঘর মেরামত করে আবারো বসবাস শুরু করে বলে জানা যায়। এর পর আবারো অগ্নিকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটে।