কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘর্ষের ২৫ বছর আজ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এলাকাবাসীর উদ্যোগে সকাল ১০টায় বড়াইবাড়ী সীমান্তে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, র্যালি, দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক এমপি রুহুল আমিন। এ সময় বক্তব্য রাখেন, বিগ্রডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতিক (অব:), অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. জয়নাল আবেদীন, কর্নেল জাকারিয়া হাসন (অব:), লেখক লেখক সাংবাদিক আবু রুশদ,, মেজর মো. জামাল হায়দার (অব:), মেজর মো.আব্দুর রব (অব:) প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্নেল জয়নাল আবদীন (অব:) বলেন, দেশ প্রমিক বিজিবির আট জন সদস্য এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সেদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করছিল। সেই সাহসিক ভুমিকা ও ঐক্যবদ্ধতা ধরে রেখে সীমান্তে নজর রাখতে হবে। যাতে কেউ অন্যায়ভাবে চোখ তুলে তাকাত না পারে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে ১৮ এপ্রিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামে অবৈধভাবে প্রবেশ করে নারকীয় তাণ্ডব চালায়। এতে নির্ভয়ে বাংলাদেশ বিডিআর ও গ্রামবাসীরা একত্রে মিলিত হয়ে বিএসএফদের প্রতিরোধের এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এতে নিহত হয় বাংলাদেশের তিন বীর বিডিআর জোয়ান। এ সময় ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ বিএসএফ সদস্য। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটিকে পালন করা হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। এই দিবসটি সরকারিভাবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় অসন্তোষ রয়েছেছে এলাকাবাসির মধ্যে। তবে বক্তারা দ্রুত দিবসটিক জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতির জোড় দাবি তোলেন।
এ ছাড়া ওইদিন ২০০১ সালর ১৮ এপ্রিল ভোররাতে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশ সীমান্তে অনধিকার প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়। ওই দিন হামলার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছিলো বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জনের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা। শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিপাহী আব্দুল কাদের। এছাড়া আহত হয় বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদুর নবী । বিডিআর গ্রামবাসীর পাল্টা আক্রমনে বিএসএফের ১৬ জোয়ান নিহত হয়। বিএসএফ এর তাণ্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামর ৮৯ টি বাড়ি। সরকারি হিসেবে মাঠে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ টাকা।