ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পক্ষে বিপক্ষে দুটি মামলার আসামীদের বেকুসুর খালাস দিয়েছে আদালত। আর এই রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। একটি পক্ষের দাবি তারা ন্যায় বিচার পান নি। এ সময় তারা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন।
আদালত ও বিক্ষোভকারীরা জানায়, ২০১১ সালে ৩০ মার্চ জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ঝালিঙ্গিগছ এলাকায় কসির উদ্দিন ও শামসুল হক পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অনেকে আহত হলেও কসির উদ্দিনের ছেলে এরশাদ মাথায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাত পেয়ে মারা যান। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করেন তার বাবা কসির উদ্দিন। ঘটনার দুই মাস পর পাল্টা মামলা করেন প্রতিপক্ষ শামসুল হকের স্ত্রী রনজিনা বেগম। আইনজীবীরা দুটি মামলা মোশন করে একত্রে পরিচালনা করেন। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোন পক্ষই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় রবিবার দুপুরে আদালত দুটি মামলার সকল আসামীকেই বেকসুর খালাস রায় দেন। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম রেজাউল বারী এই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পরপরই আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করে নিহত এরশাদের পরিবারের লোকজন। তারা ন্যায় বিচার পান নি বলে ক্ষোভ প্রকাশসহ নানা অভিযোগ তোলেন। দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এসময় নিহত এরশাদের মা রমেছা বেগম অভিযোগ করে বলেন, দিন দুপুরে তারা আমার ছেলের মাথায় কুঠার দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে। ১৪ বছর ধরে আমরা ন্যায় বিচারের জন্য ঘুরছি কিন্তু আজ আদালত সবাইকে খালাস রায় দিয়েছে। চাঞ্চল্যকর এমন হত্যাকান্ডের এমন বিচার আমরা আশা করিনি। এখানে টাকার লেনদেন হয়েছে। বিচারক বিক্রি হয়ে গেছেন।
এ ঘটনায় মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মতিন বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। আদালতের রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।
আসামীপক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, দুটি মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত দুই মামলার সকল আসামীকে খালাসের রায় দিয়েছে। আমরা আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে কোনভাবেই বিক্ষোভ গ্রহণযোগ্য নয়। তারা চাইলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারে।