নিউজ ডেস্ক: হত্যাচেষ্টা, প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এবার সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর ১ম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরোয়ানা কার্যকরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নাজমুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের মা।
জানা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুলকে সম্প্রতি ওএসডি করে বরিশাল বদলি করা হয়। তবে বদলির পরও দীর্ঘদিন নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি। যদিও সবশেষে বরিশালে যোগ দিয়ে আবারও ছুটিতে আসেন।
উল্লেখ্য, গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাজমুলের বিরুদ্ধে বিএনপি, জামাতসহ বিরুদ্ধ মত দমনের অভিযোগ রয়েছে। সাইবার ক্রাইমের এডিসি থাকাকালে নাজমুল ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী সরকারের অনলাইন পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতেন। বিশেষ করে তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে কেউ পোস্ট দিলে, কিংবা সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা করলে-তাকে ধরে এনে মামলা, নির্য়াতন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে পোস্ট মুছে ফেলতে বাধ্য করতেন। নায়িকা তথা তরুণীরা ছিলেন তার বিশেষ পছন্দের। তাদের ঘিরে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগও রয়েছে।
এমনকি সাংবাদিকরা সরকারবিরোধী কিংবা নাজমুলের পছন্দের কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করলে, তাকে তুলে নিয়ে হুমকিধমকি দিতেন। গণমাধ্যমে কর্মরত একজন সাংবাদিককে গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাজমুল ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন সেই রেকর্ডও রয়েছে। অকথ্য ভাষায় গালাগালের সেই রেকর্ডটি শুনলে যে কারো গা শিউরে উঠবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শায়েস্তা করতেও খায়েশ জানিয়েছিলেন নাজমুল। তবে ৫ আগষ্টের পর মুখোশ বদলানোর চেষ্টা করছেন। নিজেকে বিএনপিপন্থি পরিচয় দেয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি। অনলাইন মাধ্যমে যারা টাকা আয় করেন, তারা ছিলেন নাজমুলের অন্যতম টার্গেট। ইউটিউব, ফেসবুক এবং ফিল্যান্সিং করে যারা টাকা আয় করেন-তারাও ছাড় পেতেন না। এরমধ্যে ইউটিউবার মতিউর রহমান অন্যতম। ইউটিউবার মতিউরের কাছ থেকেও প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ পেয়েছে চ্যানেল ২৪ এর অনুসন্ধানী টিম। এ নিয়ে বিস্তারিত উঠে এসেছে অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান সার্চলাইটের ৩০৮ নম্বর পর্বে। পর্বটি প্রচারের পর মতিউর তার টাকা উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।