আর্কাইভ  রবিবার ● ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ● ২০ মাঘ ১৪৩১
আর্কাইভ   রবিবার ● ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: কপাল পুড়ল রংপুরের       কুড়িগ্রামের সাবেক এমপি নাজমীন সুলতানা আটক       ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্র আন্দোলনে রামদা হাতে ত্রাস সৃষ্টিকারী জ্যোতি গ্রেপ্তার       ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির ডাকা হরতাল প্রত্যাহার       কুড়িগ্রামে ৩ টি ইটভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম      

 

অবস্থার অবনতি, আইসিইউতে সাবিনা ইয়াসমিন

শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকাল ০৭:৫৪

বিনোদন ডেস্ক :  শুক্রবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন : আমি আছি থাকব’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবদন্তি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন। পরে তাৎক্ষণিক তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

তবে আজ শনিবার সকালে ফের অবস্থার অবনতি হলে সাবিনা ইয়াসমিনকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। সাবিনা ইয়াসমিনের পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
 
সূত্রটি মুঠোফোনে জানায়, শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। যদিও এ নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। সত্যি হচ্ছে তিনি অসুস্থ ছিলেন আর তিনি স্ট্রেস নিতে পারেননি, তাই মঞ্চেই পড়ে যান। পরে আয়োজকরাই হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা স্বাভাবিক হলে বাসায় ফিরে আসেন। কিন্তু আজ সকালে হঠাৎ অবস্থার মারাত্মক অবনতি হওয়ায় তার স্বজনরা তাকে ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ইনসেটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। 

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শোতে পারফর্ম করেন সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর আর তাকে মঞ্চের গানে পাওয়া যায়নি। ওইসময়টাতেও চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন।

৪ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া সাবিনা ইয়াসমিন চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

সাবিনা ইয়াসমিন শৈশবেই গানের তালিম নেওয়া শুরু করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথম মঞ্চানুষ্ঠানে অংশ নেন এবং খেলাঘর নামে বেতারের একটি অনুষ্ঠানে ছোটদের গান করতেন। ১৯৬২ সালে 'নতুন সুর' চলচ্চিত্রে রবীন ঘোষের সুরে ছোটদের গানে অংশ নেন। চলচ্চিত্রে পূর্ণ নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৭ সালে আগুন নিয়ে খেলা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। সাবিনা ইয়াসমিনরা পাঁচ বোনের মধ্যে চার বোনই সংগীতের সঙ্গে যুক্ত। ফরিদা ইয়াসমিন, ফৌজিয়া ইয়াসমিন, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন। তার আরেক বোন নাজমা ইয়াসমিন। ভগ্নীপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা ও সুরকার খান আতাউর রহমান এবং তার ভাগ্নে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা আগুন।

১৯৭২ সালে ‘অবুঝ মন’ চলচ্চিত্রের ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯৭৬ সালে প্রদত্ত প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি ‘সুজন সখী’ চলচ্চিত্রের ‘সব সখীরে পার করিতে’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘সুন্দরী’ (১৯৭৯) ও ‘কসাই’ (১৯৮০) চলচ্চিত্রের জন্য টানা আরও তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৮০-এর দশকে তার গাওয়া ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মত’ ও ‘চিঠি দিও প্রতিদিন’ গানগুলো জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই সময়ে তিনি চন্দ্রনাথ (১৯৮৪), প্রেমিক (১৯৮৫), রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত (১৯৮৭) ও দুই জীবন (১৯৮৮) চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি দাঙ্গা (১৯৯১), রাধা কৃষ্ণ (১৯৯২), দুই দুয়ারী (২০০০), দুই নয়নের আলো (২০০৫), ও দেবদাস (২০১৩) চলচ্চিত্রের গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি সর্বশেষ পুত্র (২০১৮) চলচ্চিত্রের গানের জন্য তার ১৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’, ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘ও আমার বাংলা মা’, ‘মাঝি নাও ছাড়িয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ’ ও ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’।

মন্তব্য করুন


 

Link copied