আর্কাইভ  বুধবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ ● ১৬ মাঘ ১৪৩১
আর্কাইভ   বুধবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৭ (বালক ও বালিকা) এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ       জনমানবশূন্য নীলফামারীর আট রেলওয়ে স্টেশন       গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয় তাহলে সংকট আরো বাড়বে-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু       সৈয়দপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে সর্বস্ব পুড়ে ছাই ৯ পরিবারের       নীলফামারীতে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে নানা ধরনের সামগ্রী বিতরণ      

 

এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, রাত ০৮:৪৩

 উত্তর বাংলা ডেস্ক:  ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভূমিধস বিজয় অর্জন করতে সমর্থ হয়। ওই ভূমিধস বিজয় হাসিনাকে হয়তো আজীবন প্রধানমন্ত্রীর মসনদ দখল করে রাখার সর্বনাশা খায়েশে মত্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তিনটি একতরফা নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতার মসনদকে পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন হাসিনা। এই তিন একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণ বরবাদ করে দিয়ে শেখ হাসিনাই গণ-অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতকে ডেকে এনেছেন।

 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে তিনি ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান রোসাটমের কাছ থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কিনতে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেন। 

রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা-রোসাটম।

নিজের ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

অন্যদিকে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা নিজের নামে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন।

আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ২০২২ সালে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও আজমিনা সিদ্দিক রূপান্তিকে ১০ কাঠার প্লট দেওয়া হয়। পরে রাজউকের নথিতে এটি 'রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গোপনীয়' বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকের দাবি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

অথচ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার দিনে বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। এর মানে এই দুটি ঋণের স্থিতির অঙ্কের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়ার আগে হাসিনা এই ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিশাল ঋণের সাগরে দেশের জনগণকে নিমজ্জিত করে প্রতিবছর মাথাপিছু জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখিয়ে চলেছিলেন, যাকে এককথায় বলা চলে  জনগণের সঙ্গে ভয়ানক প্রতারণা। ফলে প্রতিজন বাংলাদেশির মাথার ওপর এক লাখ টাকার বেশি ঋণের বোঝা নিজেদের অজান্তেই চেপে বসে গেছে।

হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার অজুহাতে একের পর এক মেগা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি সারা দেশে বেলাগামভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে শত শত উন্নয়ন প্রকল্প। প্রতিটি মেগা প্রকল্পে প্রকৃত ব্যয়ের তিন-চার গুণ বেশি ব্যয় দেখানোর মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে লাখ লাখ কোটি টাকা, যে জন্য এসব প্রকল্পের ব্যয় ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ’ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আর এই পুঁজি লুণ্ঠনের কেন্দ্রে ছিলেন হাসিনাপুত্র জয়, রেহানাপুত্র ববি, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ হেলাল, তাঁর ভাই শেখ জুয়েল ও তাঁর ছেলে শেখ তন্ময়, সেরনিয়াবাত হাসানাত আবদুল্লাহ ও তাঁর ছেলে সাদিক আবদুল্লাহ, শেখ তাপস, শেখ পরশ, লিটন চৌধুরী ও নিক্সন চৌধুরী এবং হাসিনার অন্য আত্মীয়স্বজন।

দেশের চলমান ৮২টি প্রকল্পে শেখ হাসিনার কোনো না কোনো আত্মীয়স্বজন জড়িত রয়েছেন, যেগুলোর প্রকল্প ব্যয় ৫১ হাজার কোটি টাকার বেশি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ তাপস মধুমতি ব্যাংকের লাইসেন্স পেয়েছেন, আরেক আত্মীয় আকরামউদ্দিন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের লাইসেন্স বাগিয়েছেন। আরেক আত্মীয় তাকসিম খান ঢাকা ওয়াসাকে লুটেপুটে খেয়েছেন ১৫ বছর। গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ার সুবাদে বেনজীর আহমেদ পুলিশে রাজত্ব চালিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। 

হাসিনার এই অবাধ দুর্নীতির খবর জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে উঠে আসলে,মানুষ এই দুর্নীতিকে বলছেন হরিলুট কান্ড।অনেকে পারিবারিক এই দুর্নীতিকে বলছেন,এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই।

(সুত্র: বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক)

মন্তব্য করুন


 

Link copied