স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী পৌরমেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদের উদ্যোগে পৌর এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নিধনে স্প্রে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী একমাস এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। পৌর বাসীকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু প্রকোপ মোকাবিলায় প্রত্যকেকে সচতেন এবং বাসা বাড়ি ও এর আশপাশ পরস্কিার-পরচ্ছিন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।
গত তিনদিন ধরে সকালে ও সন্ধ্যায় পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় পৌর পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্প্রে করতে দেয়া যায়।
শহরের পৌর মার্কেটের মুদি দোকানী বিপ্লব ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে দোকানে আশেপাশে পানি জমেছে। ফলে চারদিকে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। দুইদিন ধরে পৌরপিতার পক্ষে পৌর পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসে সকালে ও সন্ধ্যায় মশা নিধন স্প্রে করে যাচ্ছেন।
বাবুপাড়া এলাকার ফওজিয়া ইয়াসমিন জলি বলেন, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে বাড়ির আশপাশে ফুলের টপে পানি জমেছিল। গতকাল (শনিবার) থেকে বৃদ্ধি না হওয়ায় টপগুলি পরিষ্কার করি। পৌরসভা থেকে এসে স্প্রে করে গিয়েছে। কিন্তু মশার উপদ্রব কমেনি। রাতে মশারি দিয়ে ঘুমাই।
মাস্টারপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, বাড়ির সামনের ড্রেনে বৃষ্টির পানি ও আশেপাশে ময়লা জমে গেলে পৌরসভায় ফোন করে জানালে পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লা পরিষ্কার করে স্প্রে করে গেছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সন্ধ্যা হলে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। মশারি, কয়েল দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
নীলফামারীর জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত এক মাসে জেলায় ১৯ রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এসব রোগীর মধ্যে ১৮ জনই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন ডেঙ্গু প্রকোপের এলাকা ভ্রমন করেছেন। এক জনের কোন ভ্রমন কাহিনী পাওয়া যায়নি। তাদের মধ্যে ১৩ জন চিকিৎসায় সুস্থ্য বাড়িতে ফিরেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৬জন।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মো. আবু-আল হাজ্জাজ বলেন, বহনকারী এডিস মশা এবং জীবানু দুটোরই সমন্বয় থাকতে হবে। এডিস মশা সাধারণত রোগির শরীর থেকে এ রোগটি বহন করে সুস্থ্য মানুষের শরীরে ছড়ায়। তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগটির প্রধান লণ জ্বর। জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পর আবারও আসতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়। এসব লণ দেখা মাত্র রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।
সিভিল সার্জন ডাঃ হাসিবুর রহমান জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন প্রচার প্রচারনা, মতবিনিময় সভা পরিচালনা করা হচ্ছে।
পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়া। হঠাৎ করে সারা দেশে ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হওয়ায় নীলফামারী পৌর এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে পৌরসভার সকল ড্রেন, বাড়ির আশপাশে ও ময়লার স্তুপ ও মশার বংশ বিস্তার ঘটে এমন জায়গা গুলোতে মশার ঔষধ ছিটানোর কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যা মাসব্যাপী চলমান থাকবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা পরিষদ, হাসপাতাল, উপজেলা চত্বরসহ বিভিন্ন দপ্তরের আশপাশেও স্প্রে করা হচ্ছে। তিনি পৌরবাসীকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু প্রকোপ মোকাবিলায় প্রত্যকেকে সচতেন এবং বাসা বাড়ি ও এর আশপাশ পরস্কিার-পরচ্ছিন্ন রাখার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির পানি বাসাবাড়ির ছাদে, টবেও জমা হচ্ছে। ফলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। দ্রুত সেগুলি পরিষ্কার করতে হবে পৌরবাসীকে নিজে। তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো আমরা।