আর্কাইভ  শনিবার ● ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ● ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৩ নভেম্বর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: সনাতনীরা কোন নির্দিষ্ট দলের কিংবা রাজনৈতিক দলের সমর্থন করে না       ছাত্রলীগ টিকেটেই শত কোটির মালিক এই নেতারা: নেপথ্য কাহিনী       পলাতক স্বৈরাচাররা ’চট’ করে ফেরে না কখনও!       বিগত সরকার রেলের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করেছে- রেলপথ উপদেষ্টা       কোনো দলকে সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা নেই- জামায়াতের আমির      

 

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বিকাল ০৬:৫৬

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ অবিরাম বর্ষন ও উজানে ঢলের সাথে পানির চাপ ধরে রাখতে না পারায় শুক্রবার(২৭ সেপ্টেম্বর) ও শনিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) দুইদিনে ভারতের জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর গজলডোবা ব্যারাজ থেকে পানি ছাড়া হয়। এর মধ্যে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুইলাখ কিউমেক পানি ছাড়া হয়। ফলে বাংলাদেশে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বাড়ার ফলে প্লাবিত হয়েছে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রামের তিস্তা অববাহিবার নিম্নাঞ্চল।
নীলফামারীর ডালিয়াস্থ দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারীর ডালিয়াস্থ উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন ইসলাম জানান, গজলডোবা থেকে পানি ছাড়ার বিষয়টি বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে আগাম জানানো হয়নি। পরে আমরা বুঝতে পারি পানি ছাড়া হয়। গত চারদিন ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের তিস্তা অববাহিকা ছাড়াও লোকালয়ে ভারী ও মাঝারী ধরনের বৃস্টিপাত অব্যাহত থাকায় তিস্তার চর সহ নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 
সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত উজানে ভারত গজলডোবা ব্যারাজ থেকে দুই লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়। এতে করে ভারতের দোমহনী ও মেখলিগঞ্জ বাংলাদেশ সীমান্ত কালিগঞ্জ পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকত জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ অংশের ডালিয়াস্থ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছিল। এতে বিপৎসীমার (৫২.১৫) দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যে হারে পানি বাড়ছে তাতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে তিস্তা অববাহিকার জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নগুলো বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলে ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে পানি। চরাঞ্চল ও বসবাড়িতে নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত করেছে। 
গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশ অংশের তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৬৯ মিলিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। অপর দিকে রংপুর অঞ্চলের আবহাওয়া অফিস সুত্রমতে গত ২৪ ঘন্টায় উত্তরাঞ্চলের রংপুরে ৮৩ মিলিমিটার, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৪৪ ও ডিমলায় ১০০, দিনাজপুরে ১০৩, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২২৮ ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৪৮ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হয়। 
এইদিন দুপুরে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা, পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান সহ জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শন করে শুকনা খারার বিতরন করেন।
এদিকে তিস্তার চরের আবাদী জমি এবং আমনজমিগুলো তলিয়ে রয়েছে বলে জানান পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান। 
ঝাড়শিঙ্গেরশ্বর গ্রামের জনাব মুন্সি বলেন, আমাদের গ্রামটি ভারত-বাংলাদেশ তিস্তা নদীর সীমানার সাথে সংযুক্ত। ফলে ভারত থেকে পানি আসলে প্রথম ক্ষতির সম্মুখীন হই আমরা। একদিকে নদীর পানি, অন্যদিকে বৃষ্টির পানি। রান্না ঘরে গিয়ে খড়ি-পাতা দিয়ে রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। বাড়িতে মুড়ি, চিড়া গুড় দিয়ে দুইবেলা চলতে হচ্ছে। 
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, তিস্তার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণকে সার্বিক দেখভাল করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেখানে প্রয়োজন তাৎক্ষনিক ভাবে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied