আর্কাইভ  রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ● ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
আর্কাইভ   রবিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: পঞ্চগড়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগে চার তরুণ গ্রেপ্তার       নীলফামারীতে ইউনিয়ন ও পৌর ডিজিটাল কেন্দ্রের উদ্যোক্তা কল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি       জমি দখলের অভিযোগ নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতির বিরুদ্ধে       রংপুর সিটিতে নাগরিক সেবা সহজীকরণে হটলাইন:  ৬  কাউন্সিলরের ওয়ার্ডে দায়িত্ব বন্টন       বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটে ফের উৎপাদন শুরু      

 width=
 

দর্শনা-চিলাহাটি ৩৬৮ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার জরুরী

বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪, দুপুর ০২:৩৩

তাহমিন হক ববী  
 উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে দক্ষিনাঞ্চলের চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পর্যন্ত রেলপথটি বেশ পুরনো হয়ে গেছে। ফলে ট্রেন চলাচলে পাচ্ছে না গতি। রেলের পশ্চিমাঞ্চলের আওয়তায় এই রেলপথ প্রতিদিনই  চলাচল করছে সক্ষমতার চেয়েও বেশি ট্রেন। অথচ নতুনভাবে এই রেলপথ সংস্কারের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ ছাড়া ডবল লাইন স্থাপন না করায় ট্রেন চলাচলে সিডিউলও বিপর্যয় ঘটছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দর্শনা-চিলাহাটি রেলপথ পুরোটাই ব্রড গেজ (বড়লাইন)। যার দুরত্ব ৩৬৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে দর্শনা টু আব্দুলপুর ১৪০ কিলোমিটার ডবল লাইন ও আব্দুলপুর-টু চিলাহাটি ২২৮ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন রয়েছে। এতে আন্তঃনগর ট্রেনগুলো গতি পাচ্ছেনা। চালকরা বাধ্য হয়েই ৫০ কিলামিটার গতিতে ট্রেন চালাচ্ছেন। এতে সময় লাগছে বেশী। সচেতন মহল বলছেন ট্রেনের কোচ নতুন ইঞ্জিন আর ষ্টেশনগুলোর আধুনিকায়ন করলেই শুধু হবে না। রেলপথগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে এবং বন্ধ রেলস্টেশন গুলোতে ট্রেন ক্রসিং এর জন্য জনবল নিযোগ দিতে হবে।
নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়,রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এ রুটটির বেশির ভাগ অংশই পুরনো। জানা যায়, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সৈয়দপুর-চিলাহাটি ৫৫ কিলোমিটার অংশটি ১৮১ কোটি টাকা খরচ করে পুনর্বাসন করা হয়। ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দর্শনা-ঈশ্বরদী অংশে প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন স্টেশনের ইয়ার্ড পুনর্বাসন ও লুপ লাইন বাড়ানো হয়। আর ২০১২-২০১৮ সময়ে একই অংশে ৮৭ কোটি টাকা খরচ করে আধুনিকায়ন করা হয় সিগন্যাল ব্যবস্থা। এর বাইরে ২০১৯ সালের পর এই রেলপথটির আর কোনো অংশে উন্নয়ন বা পুনর্বাসনের কাজ হয়নি।
ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে (টিএআর) নেটওয়ার্কের সাউদার্ন করিডোর নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে ইউএন-এসকাপ (এশিয়া ও প্যাসিফিকের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন) সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ব্রড গেজ রেলপথ গুলোর সর্বোচ্চ ভার বহন ক্ষমতা (এক্সেল লোড) ২২ দশমিক ৫ টন। ভারতের ব্রড গেজ রেলপথগুলোয় এ সক্ষমতা ২২ দশমিক ৮২ টন। অর্থাৎ ভারতের রেলপথের চেয়ে বাংলাদেশের রেলপথের ভার বহন ক্ষমতা কম। 
রেলের একটি সুত্র জানায়,বাংলাদেশ রেলওয়ের ছয়টি সেকশনের মধ্যে পড়েছে দর্শনা থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথটি। রেলপথটির বড় অংশপুরনো, যার ভার বহন (এক্সেল লোড) ক্ষমতা কম।সেকশনগুলো হলো দর্শনা-পোড়াদহ, পোড়াদহ-ঈশ্বরদী, ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর, আব্দুলপুর-সান্তাহার, সান্তাহার-পার্বতীপুরও পার্বতীপুর-নীলফামারী এবং চিলাহাটি। রেলওয়ের সর্বশেষ ৫৩তম ওয়ার্কিং টাইম টেবিল বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, আব্দুলপুর-সান্তাহার ও সান্তাহার-পার্বতীপুরে বর্তমানে রেলপথের যে সক্ষমতা তার চেয়ে অতিরিক্ত ১৪টি ট্রেন চলছে। আর সক্ষমতার চেয়ে একটি ট্রেন বেশি চলছে পার্বতীপুর-চিলাহাটি সেকশনে। 
বাংলাদেশ রেলওয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ট্রেন চালকরা জানান,আব্দুলপুর থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন। এই সিঙ্গেল লাইনে একটি স্টেশন থেকে যখন কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়, তখন পরের স্টেশন পর্যন্ত লাইনটি ব্লক করে দেয়া হয়। অর্থাৎ অন্য প্রান্তের স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছাড়তে দেয়া হয় না। রেলপথে ট্রেনের সংখ্যা যত বেশি হয়, এ ব্লক সেকশনের কারনে ট্রেনগুলোর অপেক্ষা ততই বাড়ে। আব্দুলপুর-সান্তাহার, সান্তাহার-পার্বতীপুর ও পার্বতীপুর-চিলাহাটি সেকশনে ট্রেনের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেই বর্তমানে যাতায়াতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। এ ছাড়া ট্রেনের গড় গতি ৫৫ কিলোমিটার। এতেও সময় লাগছে বেশী গন্তব্যে পৌছাতে। 
সুত্র মতে দর্শনা-চিলাহাটি রুটে শুধু যে সক্ষমতার বেশি ট্রেন চলছে তা-ই নয়, এ পথে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেনের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান। তাই ট্রেনের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ রুটের সবচেয়ে ব্যস্ততম সেকশন হলো ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর। ২০১৭-১৮ অর্থবছর এ সেকশনে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি যাত্রীবাহী ট্রেন ও দুটি মালবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। ট্রেনগুলো প্রতিদিন গড়ে ৫১৫টি কোচ, ৮০টি ওয়াগন ব্যবহার করেছে। এর পরের অর্থবছরে সেকশনটিতে প্রতিদিন চলাচল করা যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টিতে। একই সময়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেনের চাহিদা বেড়েছে দর্শনা-চিলাহাটি রুটের অন্য সেকশনগুলোয়ও।এমন প্রেক্ষাপটে  বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নতি জরুরী হয়ে পড়েছে বলে সচেতন রেলযাত্রীরা মনে করেন। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied