শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর: টাকা আর দলিল চুরি করতে গিয়ে দেখে ফেলায় শয়নকক্ষে নানীকে গলা কেটে হত্যা করে তিন নাতি।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আলোচিত সেই বৃদ্ধা হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। বৃদ্ধা নানী হত্যার দায়ে তিন নাতীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এনিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ প্রেস ব্রিফিং করেছেন। গণমাধ্যমেকর্মীদের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন,গত ৬ জুন নিজ শয়ন কক্ষে তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল ৭৫ বছরের বৃদ্ধা
রেজিয়া বেগমকে।হত্যার ঘটনাটি প্রথমে ক্লুলেস ছিল। কিন্তু তদন্তে একে একে বেরিয়ে আসে এ খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য। চুরি দেখে ফেলায় মুলত; এই হত্যাকান্ড।
হত্যার শিকার বৃদ্ধ নানী রেজিয়া বেগম (৭৫) দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ধনগাঁও পশ্চিমপাড়ার শতবর্ষি সবদুল মিয়ার স্ত্রী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন,বীরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ধনগাঁও জুম্মা হাট গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে মো.জাহির হোসেন (২৬),মো. রেনু মিয়ার ছেলে মো.হাসিম মিয়া ( ৪৩) ও দেঊলী গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে মো. রমজান আলী (২৫)।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গন মাধ্যমকর্মীদের প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ আরো জানান, ঘটনার রাতে নিজ নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন, পরিবারের সদস্যরা। রাতের কোন এক সময়ে চুপিসারে কয়েকজন বৃদ্ধার ঘরে টিনশেড ঘরে প্রবেশ করে। ট্রাংক ভেঙ্গে গরু ও গম বিক্রির ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের সাত আনার স্বর্নালংকারসহ জমির দলিল গচ্ছিত হাতিয়ে নিচ্ছিল তারা। শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে বৃদ্ধার চোখে পড়ে তার ছেলে এবং মেয়ে পক্ষের তিন নাতিকে। চিনে ফেলা বৃদ্ধাকে আঘাত করে কাবু করে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দা দিয়ে জবাই করে হত্যার পর মরদেহ শয়ন কক্ষের খাটে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। হত্যার ওই ঘটনাটি প্রথমে ক্লুলেস হিসেবে মামলা দায়ের করেন বৃদ্ধার ছেলে সুনু মিয়া। তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রথমে বৃদ্ধার দেবর আব্দুল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেনকে আটক করেন তারা। তার দেওয়া তথ্যমতে বৃদ্ধার আরেক দেবর রেনু মিয়ার ছেলে হাসিম মিয়া এবং মেয়ে পক্ষের নাতি রমজান আলীকে আটক করার পর হত্যা রহস্য উম্মোচন ঘটে।
আটক তিন নাতির দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা এবং লুন্ঠিত জমির দলিল উদ্ধার করেছেন পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম, বীরগঞ্জ থানার ইনচার্জ মজিবুর রহমান এবং ডিবি পুলিশের ইনচার্জ সোহেল রানাসহ অন্যান্যরা।