শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর: দিনাজপুরে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও তার বড় ভাই হাই কোটের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামীলীগ,যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের ২০ জন নেতা কর্মীর নাম দিয়ে আরো অজ্ঞাত নামা ৪০০/ ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমাবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন শহরের উপশহর ৭ নং ব্লকের বাসিন্দা মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে মোঃ রুহান হোসেন(৪১)।তিনি জেলা যুবদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফরাদ হোসেন হোসেন। তিনি বলেন,দিনাজপুর
কোতয়ালী থানার মামলা নং ১৮, তারিখ ১৯/৮/২০২৪ ইং। ধারা ১৪৩/১৪৭/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/১১৪/১০৯/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
আসামীরা হলেন- সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও তার বড় ভাই হাই কোটের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি (সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি) এনায়েতুর রহিম,জেলা আওয়ীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাসেদ পারভেজ,সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসন, কোতয়ালী আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন, শহর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শেখ শাহ আলম,মোঃ আশরাফুল আলম রমজান,যুবলীগ নেতা সালেকিন রানা,স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আবু ইবনে রজব,যুবলীগ নেতা মোঃ মিথুন,মোঃ সুইট,সদর উপজেলার ৩ নং ফাজিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক,উত্তর বালুবাড়ী এলাকার শ্রী শংকর,রামনগর এলাকার যুবলীগ নেতা মোঃ হারুনর রশিদ রায়হান, কোতয়ালী আওয়ামীলীগের সভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদ সরকার,কোতয়ালী আওয়ীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৪ নং শেখপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মমিনুল ইসলাম, ৫নং শশরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী রানা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম, ও ছাত্রলীগ নেতা মিথুনসহ অজ্ঞাতনাম্ ৪০০/৫০০ জন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বৈষ্যম বিরোধী কোটা আন্দোলনে সারা দেশের ন্যায় গত ৪ আগষ্ট দিনাজপুরেও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন করছিল। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় আন্দোলনকারীরা হাসপাতাল মোড় থেকে বাংলা স্কুল মোড় হয়ে জিলা স্কুলের সামনের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও তার বড় ভাই হাই কোটের আপীল বিভাগের অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের উস্কানিতে আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছা সেবক লীগ,শ্রমিক লীগ দু নালা বন্দুক, একনলা বন্দুক, কিস্ফোরক দ্রব্য, পিস্তল, রিভালবার, হাসুয়া, সামুরাই রোহার রোড,চাইনিজ কুড়াল, পশু কুড়াল, লাঠি সোটাসহ আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও হামলা চালায়। এতে সদর উপজেলার ৩নং ফাজিলপুর ইউনিয়নের বিদুরসাহি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে রাহুলসহ ৬জন গুলি বিদ্ধ হয়। এ সময় পুলিশ বিজিবি টিয়ার সেল, গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।পরে তাদের উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হলে।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাদগীন অবস্থায় গত ৯ আগষ্ট সন্ধ্যায় রাহুল মারা যায়।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে মামলার বাদী মোঃ রুহান হোসেন মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।তিনি বলেন, 'আমলার আসামিরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাদের গ্রেফতার করা জরুরি। তা না হলে তারা আয়ার জান-মালের ক্ষতি সাধন করতে পারে।'
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মোঃ ফরাদ হোসেন হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে।