নিউজ ডেস্ক : নারীর ক্ষমতায়নে সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে সংসদের নারী আসন বাড়িয়ে ১০০ এবং সরাসরি নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য সংবিধান ও নির্বাচন পদ্ধতি, নির্বাচনি আইনে পরিবর্তন আসছে। এ দুই সংস্কার কমিশনের সুপারিশে নারীর ক্ষমতায়ন অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে জাতীয় সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার সুপারিশ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪০০ আসন থাকবে সংসদের নিম্নকক্ষে। বর্তমান পদ্ধতিতে হবে নির্বাচন। তবে ১০০ আসন সংরক্ষিত থাকবে নারীদের জন্য। তাঁরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। একইভাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ও আসন সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছে। এজন্য সংবিধানসহ নির্বাচনি আইনে পরিবর্তন আনার সুপারিশ দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের সমাজে জনসংখ্যার অর্ধেক হচ্ছে নারী। নারীদের বর্তমান যে প্রতিনিধিত্ব তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও ক্ষমতায়ন নারীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য অপরিহার্য। নারীদের বহুদিনের দাবি ছিল সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং এ দাবি যৌক্তিক। কীভাবে এ দাবি পূরণ করা যায় তা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। এদিকে আজ সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদে মোট আসন ৩৫০টি। ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। সাধারণ নির্বাচনে পাওয়া আসনের অনুপাতে নারী আসনগুলো বণ্টন করা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য বিদ্যমান জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন-২০০৪’, জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন এবং সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হবে।
ইসি সংস্কার কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সিইসি ও ইসি নিয়োগ; এক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে সংসদের বিরোধী দল এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা; নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, ক্ষমতা, ইসির দায়বদ্ধতা; নির্বাচন বাতিল করার বিষয়, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ, ভোটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ১৯৯১ বিশেষ আইন, নির্বাচনি অপরাধ; সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ; নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, গণমাধ্যম নীতিমালা; নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ, সংসদীয় আসন সংখ্যা বাড়ানো, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, ‘না’ ভোটের বিধান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি ও গণভোটসহ সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদনে সুপারিশ দিচ্ছে কমিশন। সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি আইনেও বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করছে ইসি সংস্কার কমিশন।
সংরক্ষিত নারী আসন : নারীদের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালের সংবিধানে পরবর্তী ১০ বছরের জন্য সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়। ১৯৭৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসন ৩০ করা হয়। ২০০৪ সালে ৪৫টি করা হয়। নবম জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা হয়।