নিজস্ব প্রতিবেদক: গত সপ্তাহজুড়ে ১০০ টাকার কমে মেলেনি কোনো সবজি। ডিমের দাম ছিল রেকর্ড পরিমাণ। তবে সরকারের হস্তক্ষেপে ডিমের দাম কিছুটা কমলেও এবার বাজারে বাড়ছে মুরগির দাম। সরকার নির্ধারিত দামের থেকে ব্রয়লার মুরগি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও এখন সংসার চালাতে কঠিন সময় পাড় করছেন।
রংপুর নগরীর শাহীপাড়ার গৃহবধূ মনিরা ইসলাম বুধবার এক ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতাকে বলেন ২০ টাকার কাঁচা মরিচ দিতে। প্রথমে বিক্রেতা তা দিতে অস্বীকার করেন। অনুনয় বিনয় করার পরে ওই সবজি বিক্রেতা ২০ টাকার কাঁচা মরিচ দেন। ওই গৃহবধূ মরিচ গুনে দেখেন ২০ টাকায় ১১টি মরিচ পেয়েছেন। কারণ কাঁচা মরিচের কেজি ৫০০ টাকা। শুধু মনিরা ইসলাম নয় শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। সচেতন মহলের ভাষ্য, মানুষ নিত্যপণ্যের বাজেট কাঁটছাট করতে বাধ্য হচ্ছেন। যাদের আগে হাফ কেজি আলু লাগত তারা এখন আড়াইশ গ্রাম দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছেন। শাক-সবজি, তেল, চাল-আটাসহ প্রতিটি পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, সবখানে সিন্ডিকেট। ক্রেতাদের পকেট খালি করতে সিন্ডিকেটের জুড়ি নেই। রংপুরসহ বিভিন্নস্থানে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ৫৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে চাল। চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। সয়াবিন তেলের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না অনেক অসাধুব্যবসায়ী। শাক-সবজির দাম কৃষক পর্যায়, পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে বিস্তর ফারাক। বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ৫০-৭০ টাকা। আড়াইশ গ্রাম শিম ৭০ টাকা। প্রতিটি সবজির দাম প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানছে না কেউ। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, ডিমের মূল্য নির্ধারণ হয় ঢাকা থেকে। সেখান থেকে যে দর বেঁধে দেয় এর বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। উৎপাদক পর্যায়ে কৃষকরা অনেক কম দামে পণ্য বিক্রি করে। সেই পণ্য কয়েক হাত ঘুরে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। এটা দুর্বিসহ অবস্থা। রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুন বলেন, দেশে মজুদদারি প্রতিরোধে আইন হয়েছে। এ আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ করে সিন্ডিকেট ও মজুদদারদের দৌরাত্ম্য রোধ করা হলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে।