স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও নীলফামারী-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামন নূরের বিরুদ্ধে নীলফামারীতে নতুন করে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে নীলফামারী সদর বিজ্ঞ আমলী আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানাকে এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান বাদী পরে দুই আইনজীবী যথাক্রমে আনিসুর রহমান আজাদ ও মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী।
এই মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার লীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি এলাকার মৃত সিদ্দিক আলীর ছেলে মো. লিটন রহমান। মামলায় নূর ও জেলার আওয়ামী লীগের ২০২জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ১০০০/১৫০০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সহ-সভাপতি হাফিজুর রশিদ মঞ্জু, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুজার রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোসফিকুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শাহিদ মাহমুদ, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কাশেম শাহ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার প্রমুখ। এর আগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে নীলফামারীতে বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানী হত্যা সহ আরও তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে দুটি হত্যা মামলায় নুর গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে ঢাকার কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
নীলফামারীর এই মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীরা লীচাপের কাছারি বাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়ে লুটপাট চালায়। দুইদিন পর ১৪ ডিসেম্বর উল্লেখিত আসাদুজ্জামান নুরের নেতৃত্বে আসামীরা আবারও ওই বাজারে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সরকার বিরোধীদের হুমকি প্রদান করে। বাজার থেকে ফেরার পথে বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীরা। এরপর রামগঞ্জ বাজারে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীরা ভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মারধর শুরু করে। এ সময় বাদী লিটন রহমানের পিতা সিদ্দিক আলী আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে বাঁচাতে ছুটে আসলে সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর দ্রুত তার গাড়ি দিয়ে সিদ্দিক আলীকে চাপা দিয়ে হত্যা করে। এ সময় সিদ্দিক আলী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। কিন্তু আসামীরা লাশের ময়না তদন্তে বাধা দিয়ে লাশ দাফনে বাধ্য করেছিল। বর্তমান পরিস্থিতি অনুকুলে থাকায় বাদী ঘটনার ১১ বছর পর মামলা দায়েরের সুযোগ পেয়েছে।