মহিউদ্দিন মখদুমী
আমি রংপুর। আমি ভালোবাসতে চেয়েছিলাম। কাছে গিয়ে প্রেম নিবেদন করেছিলাম। তা গ্রহণ করেনি আগের কোন সরকার। আমাকে ভালোবাসেনি, তাই গড়তে চায়নি কেউ। প্রচন্ড আবেগে তখন আমি কেঁদেছিলাম। নিরবে অভিশাপ দিয়েছিলাম। কেন সর্ব উত্তরের জেলা হিসেবে আমাকে উন্নয়ন বঞ্চিত করে রাখা হবে ? কেন আমাকে উন্নয়নে সমৃদ্ধ করা হবে না ? কেন আমাকে স্থবির করে রাখা হবে? কেন আমি শুধু ভোগের উপকণের মতো হবো ? রাজনীতিক ভোটের লাভ লোকশানে আমাকে গিনিপিগ করে কেন রাখা হবে? কেন স্বাধীনের পর থেকেই অবহেলা ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়ে উন্নয়ন বঞ্চিত আমি? এইসব দুঃখ বলতে বলতে জাতীয় সংসদ ভবন ও গণভবনের সামনে দাঁড়িয়ে অসংখ্যবার কেঁদেছি। কিন্তু আমার কান্নার ঢেউ জাতীয় সংসদ ভবন ও গণভবনের ওই বিশাল দালান ভেদ করতে পারেনি। তখন আমার কষ্ট উপলব্ধিতে নিয়ে কেউ কণ্ঠ ছাড়েনি। আমার পক্ষ নেয়ার কোন প্রেমিক ছিল না। আসলে নিজের সন্তান ছাড়া নিজের কেউ নয়। হয়ে উঠে না।
প্রিয় ববি,
তুমি যখন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে ‘হামার রংপুর’ শব্দটি বলছিলে। তখন আমার শরীরে ভুমিকম্পের মতো একটি ঝাঁকুনি টের পাচ্ছিলাম। অনুভব করছিলাম আমাকে নিয়ে তোমার গভীর ভালোসার স্পষ্ট ছাপ। ২০০৮ সালের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আমার দৃশ্যমান উন্নয়ন শুরু হয়। ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারী রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় ‘রংপুরের পুত্রবধু হিসেবে রংপুর উন্নয়নের সার্বিক দায়িত্ব আমি আমার নিজ হাতে তুলে নিলাম’ এ ঘোষণা দেয়ার পর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ভালাবাসা এসেছে আমার কাছে। কোমল প্রেমে খুলে গেছে সব দরজা কপাট। আমাকে নিয়ে, স্বপ্ন সাজানো হচ্ছে। আমার শরীরে উন্নয়ন অলংকার পড়ানো হচ্ছে। তাই ‘এখন’ আমার নামের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে-রংপুর বিভাগ, রংপুর সিটি কর্পোরেশন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর এক্সপ্রেস ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রিয় ববি,
জাতীয় সংসদে প্রথম দিন দাঁড়িয়ে তুমি মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়েছ। আমার উন্নয়নের কথা বলেছ। আমার অঙ্গ, তোমার আবেগের সদর উপজেলার কথা বলেছ। দীর্ঘ সংসদীয় সময়ে তোমার মতো স্পষ্ট শব্দে, এভাবে, কেউ আমাকে ব্রান্ডিং করেনি। আমাকে ভালোবাসা শক্তি তোমাকে প্রেরণা দেবে। দ্যাখো, আমার শরীরের উন্নয়ন অলংকার গুলো চক্চক্ করছে। বাতাসে ভেসে আসা তোমার শ্রুতিমধুর কথার মতো। ভালো থেকো তুমি। খুব ভালো।
ইতি
তোমারই
রংপুর।