ডেস্ক: জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবরে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে তেলের পাম্পে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মোটরসাইকেল ও বাস চালকরা। আজ শনিবার সকালে তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বগুড়া থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি বেশ কিছু বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, গতকাল রাতে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মোটরসাইকেল ও বাস চালকরা তেলের পাম্পে ভিড় করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিভিন্ন তেলের পাম্পে দীর্ঘলাইন দেখা যায়। শহরের আশপাশে তেলের পাম্পগুলোতে কয়েক’শ মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তেল না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসে। এ ঘোষণায় ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম প্রতি লিটারে ৪৬ টাকা আর পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়। গতকাল রাত ১২টা থেকে সরকারের এ সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন বিক্রি হচ্ছে ১১৪ টাকায়। প্রতি লিটার অকটেনের জন্য দিতে হচ্ছে ১৩৫ টাকা, প্রতি লিটার পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
গতকাল রাতে বগুড়ায় দেখা যায়, শহরের মাটিডালি, ২য় বাইপাস, সাবগ্রাম, বনানী, শাকপালা মোড়, মেডিকেল, সিলিমপুর, বেতগাড়ী এলাকার পাম্পগুলোতে রাত ১১টার দিকে ভিড় শুরু হয় মোটরসাইকেল চালকদের। প্রতিটি মোটরসাইকেল চালকই তাদের সাধ্যমত তেল বাইকের টাংকিতে ভরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
বগুড়ার সিলিমপুর এলাকার বগুড়া ফিলিং স্টেশনে মোটর সাইকেল চালক রুবেল হোসেন জানান, হঠাৎ করে রাতের মধ্যে এমন প্রজ্ঞাপন জারি করে বিপাকে ফেলা হয়েছে মোটরসাইকেল চালকদের। কারণ মোটরসাইকেল চালকরাই সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল পেট্রোল ও অকটেন ব্যবহার করে থাকে। বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকই সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। হঠাৎ লিটার প্রতি প্রায় ৫০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়তে হলো।
মুকুল ইসলাম, রাজা মিয়াসহ আরও বেশ কয়েকজন জানান, রাতে বাড়ি ফেরার পথে জানতে পারি জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবর শুনে ছুটে এসেছি তেল নিতে। ৫০০ টাকার তেল নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই। কিন্তু যে পরিমাণ ভিড় ছিল তাতে তেল সংগ্রহ করতে পারিনি।
সাতমাথা এলাকায় এক মোটরসাইকেল চালক জানান, এবার সকল পণ্যের দাম বাড়বে। পরিবহন সেক্টরের ভাড়া বেড়ে যাবে। ভাড়া বেড়ে গেলে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম বাড়বে। দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়ে যাবেন নিম্নবিত্ত পরিবার।
এদিকে, বগুড়ায় পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দুরপাল্লা ও অভ্যন্তরিন রুটে তেলচালিত বেশিরভাগ বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল থেকেই এই অঘোষিত ধর্মঘট শুরু হয়।
বগুড়ার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রংপুর, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, নগরবাড়িসহ রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে বাস বগুড়া ছেড়ে যায়নি। তবে সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ ও জেলার অভ্যন্তরীন রুটে গ্যাসে চালিত বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।
পরিবহন শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের দাবি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকসানের মুখে তারা যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। নতুন করে ভাড়া নির্ধারণ না করা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সভাপতি শাহ মোঃ আখতারুজ্জামান ডিউক জানান, মালিক পক্ষ থেকে কোন ধর্মঘট ডাকা হয়নি। যারা তেলে গাড়ি চালায় তারা বন্ধ রেখেছে। তারা নিজ দায়িত্ব থেকে বাস বন্ধ রেখেছে।