শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর: ক্ষতিপূরণসহ ৬ দফা দাবিতে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির প্রধান ফটক ঘেরাও করে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। ২০ দিনের মধ্যে দাবি পুরণ না হলে ফের কয়লা খনি ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসুচি দেয়া হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় খনির নিরাপত্তা জোরদারে সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়েছে খনি এলাকায়।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দিকে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে খনি এলাকার বিভিন্ন স্থানে নারী-পুরুষ-আবাল-বৃদ্ধ- বনিতারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। খন্ড খন্ড মিছিলগুলো পরে খনির গেটে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের মুখে সড়কের দু'ধারে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। বিঘ্নঘটে যানবাহন চলাচলে। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ সমাবেশ।
খতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার থেকে স্থায়ী চাকরি দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িতে বাস করা পরিবারগুলোকে দ্রুত পুনর্বাসন, ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে উন্নতমানের বাসস্থান, ক্ষতিগ্রস্তদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পূর্ণনির্মাণ করা এবং যাদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদের কয়লা উৎপাদন থেকে বোনাস দেওয়াসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা জানান, ভূগর্ভে মাইন বিস্ফোরণের কারণে বিকট শব্দ ও কম্পনে খনি সংলগ্ন বৈগ্রাম-কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জব্বর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দুর্গাপুর মোট ১৩টি গ্রামের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ফেটে গেছে। অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৬ দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও তা আমলে নেয়নি খনি কর্তৃপক্ষ। এভাবে চললে আমরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। আন্দোলনে কোনো প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। ২০ দিনের মধ্যে দাবি না মানলে ফের খনি ঘেরাও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘গ্রামবাসীরা আন্দোলন করেছেন জেনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা কাজ করছি।’
এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষতিগ্রস্ত দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা,আন্দোলনরত নেতা আলী হোসেন, রবিউল ইসলাম মণ্ডল, আল বেরুনী, আব্দুর রহমান, আবেদ আলী, সাইদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।