স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর ডিমলায় সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাইপথে নিয়ে আসা মাদকের আস্তানা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার, হত্যার হুমকি ও হামলাকারিদের বিচারের দাবিতে ডিমলা উপজেলা শহরে ব্লকেড কর্মসুচি পালন করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বুধবার (২২ জানুয়ারী) বিকাল তিনটা থেকে তিন ঘন্টা ব্যাপী এই কর্মসুচি পালনে উপজেলায় সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। কর্মসূচিতে ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ মতে, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের হাতে হামলার শিকার হন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মো. রেজাউল করিম নামে এক শিক্ষার্থী। রেজাউল করিম ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা ঘাটের পাড় গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের ছেলে। এঘটনায় ডিমলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় চিহ্নিত মাদক ও অবৈধ গরু ব্যবসায়ী পিয়ারুল ইসলাম, নুর আলম, নুর ইসলামসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়। তবে, মাদক ব্যবসার মূলহোতাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই তাদের জামিনে মুক্তি পায়।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা মিলে নীলফামারীতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচার পতনের পর এলাকায় ফিরে দেখি, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারি এবং মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটছে। বিষয়টি বালাপাড়া বিজিবি কমান্ডারকে জানাই, কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিই। পোস্টে উল্লেখ করি, আজ(১৯ জানুয়ারী) সকাল ৬টার দিকে পশ্চিম ছাতনাই এলাকায় ভারত থেকে অবৈধ গরু ও মাদক আনার সময় চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে ভারতীয় বিএসএফ গুলি চালায়। এরপর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা যেন আর না যায়। এই ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়ার মূল কারণ বলে তিনি মনে করেন। মাদক ও চোরাচালানের বিরুদ্ধে রেজাউল করিমের এই সাহসী অবস্থানকে এলাকাবাসী প্রশংসা করলেও, তার উপর হামলার ঘটনায় সবার মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দেয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডিমলা উপজেলা প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান রাশেদ জানান, পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জ বাজারে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের দাবি জানানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ডিমলা উপজেলায় মাদকের মূলহোতা গ্রেপ্তারের পূর্বেই জামিনে মুক্তি পাওয়ায় মাদকবিরোধী কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে অবস্থান নেওয়া ছাত্র প্রতিনিধি ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা এবং হত্যার হুমকির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।