নিউজ ডেস্ক: রংপুরে তিস্তা-ঘাঘটসহ একাধিক নদ-নদী রয়েছে। এসব নদীকে ঘিরে অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। শুকনো মৌসুমে চরে কৃষকরা বিভিন্ন ফসল আবাদ করেন। একদশ আগেও চরের উৎপাদিত ফসল কিংবা কোন পণ্য আনা নেয়ার জণ্য ঘোড়াগাড়ির কথা চিন্তাই করা যেত না। এখন চরের বাহন মানেই ঘোড়াগাড়িকে বুঝানো হয়। চরাঞ্চলে ঘোড়াগাড়ি জনপ্রিয় হওয়ায় কৃষকরা এখন খুব সজসেই পণ্য অনানেয়া করতে পারছে। আবার অনেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে বেকারত্ম ঘুচাচ্ছেন।
রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নই হচ্ছে তিস্তা নদীবেষ্টিত। কাউনিয়া এবং পীরগাছা উপজেলায় রয়েছে অর্ধশতের বেশি চরাঞ্চল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কাউনিয়া উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের গ্রামচর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর গদাই, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ, শনশনাটারি,শুভাঘাট, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান
করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি। বালু আর কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাকসহ অনান্য বাহন যেতে পারে না সেই সকল রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়া গাড়ির কদর বেড়েছে। কাউনিয়া মত গঙ্গাচড়া উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, ডাল, কুমড়া এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই চরেই বিক্রি করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করছে। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্রায় ছয় শতাধিক ঘোড়া গাড়ি রয়েছে।
কাউনিয়ায় বালাপাড়া ইউপির গোপিঙ্গা গ্রামের ঘোড়া গাড়ি চালক আঃ রহমান বলেন এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে। ঘোড়া গাড়ি চালান শুরুর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন অভাব নেই।
একই উপজেলার পল্লীমারী একতা গ্রামের ঘোড়া গাড়ি চালক গনি মিয়া জানায়, প্রায় ৫বছর থেকে তিনি ঘোড়া গাড়ি চালান। , তার দৈনিক আয় ৭থেকে ৮শত টাকা, তবে আলুর মৌসুমে আয় আরও বেশী হয়। একই কথা জানালেন ঘোড়া গাড়ি চালক আঃ রহিম ও নুর নবী কয়েকজন।
হারাগাছ ইউপি সাবেক চেয়ারম্যা রাকিবুল হাসান পলাশ জানান, তাঁর ইউনিয়নে দেড়শতাধিক ঘোড়া গাড়ি আছে। বালাপাড়া ইউপি মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানান তার ইউনিয়নে ৮০ থেকে ৯০টি ঘোড়া গাড়ি আছে।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান তার ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়া গাড়ি আছে, শহীদবাগ ইউপি মেম্বার সোলেমান মিয়া জানান তার ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০টি ঘোড়া গাড়ি রয়েছে।