নিউজ ডেস্ক: গত বছরের তুলনায় চলতি বছর রংপুরে প্রতি কেজি বীজ আলুতে কৃষককে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ফলে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন খরচ বাড়বে অন্তত দেড় গুণ।
কৃষকদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র ইচ্ছেমতো বীজ আলুর দাম নির্ধারণ করছে। বীজ সংকটের কারণ দেখিয়ে তারা সিন্ডিকেট করে বীজ আলুর নির্ধারণ করে দিচ্ছে। জেলার প্রতিটি হাটবাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
রংপুর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে বাড়ানো হয়েছে অভিযান। অনিয়ম পেলেই সঙ্গে সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে রংপুরে আলু বীজের চাহিদা এক লাখ ৬৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বিএডিসির যোগান মাত্র ২ হাজার ৭৯৭ মেট্রিক টন ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে ৫ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন। আর হিমাগারগুলোতে মজুদ আছে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ বীজ আলুর ঘাটতি রয়েছে অর্ধেকেরও বেশি।
বিএডিসি কেজিপ্রতি বীজ আলু ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকা দর নির্ধারণ করলেও ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকদের কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত। কৃষকদের অভিযোগ, বিক্রেতারা খেয়ালখুশি মতো বীজের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।
বীজ আলু বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে গতকাল বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও কৃষি বিভাগ একতা সীডস নামে একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ৭২ টাকার বীজ আলু ১১০ টাকায় কৃষকের কাছে বিক্রির সত্যতা পাওয়া যায় বীজ কোম্পানিটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে। কৃষি দফতর ও ভোক্তা অধিকার জানায়, একটি চক্র অসদুপায় অবলম্বন করে বেশি দামে বীজ বিক্রি করছে। যার প্রভাব পড়ছে আলুর দামেও।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি বীজ) উপ-পরিচালক মো. মাসুদ সুলতান জানান, চলতি মৌসুমে চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ আলু বীজ সরবরাহ করছে বিএডিসি, ৩ শতাংশ সরবরাহ করছে বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলো। আর চাহিদার বাকিটা নিয়ন্ত্রণ করছে হিমাগার পর্যায়ের মজুদদাররা হিমাগার সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সরকারি পর্যায়ে বীজ আলুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। বিএনডিসির বীজ মান সম্পন্ন। এই কারণে এর চাহিদা অনেক বেশি।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, বীজ আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত মনিটরিং চলছে। অনিয়ম পাওয়া গেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি জানার এবার রংপুর জেলায় প্রায় ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হবে। এ জন্য কৃষকেরা সব প্রস্তুতি নিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো আলুর ভালো ফলনের আশা করছেন এই কর্মকর্তা।