হাসান আল সাকিব: পাকা ব্রিজটির পশ্চিম অংশ ২০১৭ সালে বন্যায় দেবে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। তখন ব্রিজের দুইপাশের সংযোগ সড়কও ভেঙে যায়। এখন চার বছর ধরে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভাঙা ব্রিজের ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। ভাঙা ব্রিজের উপর এই বাঁশের সাঁকোর অবস্থান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় টেপামধুপুর ইউনিয়নের আজমখাঁ গ্রামে।ওই গ্রামে তিস্তার শাখা মানস নদী পাড়ি দিতে হতো নৌকায়। অনেক দাবি দাওয়ার পর মিলছিলো পাকা ব্রিজটি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এডিপি প্রকল্পের অর্থায়নে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে টেপামধুপুর ইউনিয়নের আজমখাঁ গ্রামে মানস নদীর ওপরে ১৮ ফুটের দীর্ঘ আরসিসি বক্স কালভাট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বন্যায় ব্রিজটির পশ্চিম অংশ পানিতে ধসে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, পাকা ব্রিজটির পশ্চিম অংশ পুরোটা দেবে গিয়ে নদীতে তলিয়ে আছে।ব্রিজটির দুইপাশেই সংযোগ সড়কও ভেঙ্গে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটির ওপরে এবং ভাঙ্গা সড়কে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে গ্রামের মানুষরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে। আজমখাঁ গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল মিয়া বলেন,পাকা ব্রিজ নির্মাণের আগে আমরা প্রথমে নৌকায় পারাপার হতাম। পরে পারাপারে সংখ্যা বেড়ে গেলে ওই স্থানে বাঁশের সাঁকো তৈরী করি আমরা স্থানীরা।
হয়বৎখাঁর গ্রামের বাসিন্দা আবেদ আলী উত্তর বাংলাকে বলেন, আমাদের এই রাস্তাটি ছাড়া শহর ও হাট-বাজারে যাতায়াতের বিকল্প কোন রাস্তা নাই। ভাঙ্গা ব্রিজটির কারণে বিশেষ করে রোগীদের ঘাড়ে করে কাঠের সাঁকো দিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ পার করা পর গড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ঝুঁকিপুর্ন সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে পিছলে গিয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও ভ্যানচালকদের নদীর পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা এনামুল মিয়া বলেন, গ্রামের ছেলেমেয়েরা কাউনিয়ায় স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। গ্রামে বসবাসকারী মানুষদের হাট-বাজার বা জেলা শহরে যেতে হলেও ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ পার হয়ে যেতে হয়।
টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, আজমখাঁ গ্রামে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক সংস্কার নিয়ে কয়েকবার উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সভায় তুলে ছিলাম।তিনি আরও বলেন,প্রকৌশলীর সঙ্গে কথাও হয়েছে।আশা করছি খুব দ্রুত ওখানে একটা সেতু হবে।তখন ওই গ্রাম গুলোর মানুষের আর দূর্ভোগ হবে না।
কাউনিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আসাদুজ্জামান জেমি মুঠো ফোনে জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। কয়েক সপ্তাহ পূর্বে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটি পরিদর্শণ করে প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠিয়েছেন। অনুমোদন পেলে টেন্ডারের মাধ্যমে ব্রিজটির নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।