আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ● ৩ কার্তিক ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৮ অক্টোবর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প       নীলফামারীতে ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন       নীলফামারীতে প্লাষ্টিকের ব্যবহার বন্ধে মতবিনিময় সভা       ডোমারে বিএনপির সমাবেশে জনস্রোত ॥ বক্তব্য রাখেন শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন       সাকিবের দেশে আসা স্থগিত, ব্যাখ্যা দিলেন ক্রীড়া উপদে      

 width=
 

শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি: বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রেক্ষাপট

শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, সকাল ০৯:৩৯

শেখ মাজেদুল হক

প্রতি বছর ৫ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস, যা শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক বিশেষ উপলক্ষ। এই দিনটি শিক্ষকদের সেই অতুলনীয় অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে, যা কেবল শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সফলতাই নয়, বরং তাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে সাহায্য করে। শিক্ষকেরা আমাদের প্রথম দিক নির্দেশক, যারা আমাদের জীবনের ভিত্তি তৈরি করেন এবং স্বপ্নপূরণের পথে আমাদের মনোবল জোগান।

পরিবারের বাইরে বিদ্যালয়ই আমাদের জীবনের প্রথম প্রকৃত পাঠশালা। এখানে শিক্ষকদের সান্নিধ্যে আমরা গড়ে উঠি, আমাদের মন-মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি গঠিত হয়। একজন শিক্ষকের কাজ শুধু পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান প্রদানেই সীমাবদ্ধ নয়। তাঁরা আমাদের শেখান কীভাবে নিজেকে একজন নৈতিক, দায়িত্বশীল ও সহমর্মী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়। তাঁরা আমাদের জীবনের বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং কীভাবে তা মোকাবেলা করতে হবে সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেন। এই শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথ প্রদর্শন করে।

একজন আদর্শ শিক্ষকের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত মূল্যবান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথার্থ শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মানসিক বিকাশেও একজন ভালো শিক্ষক প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করেন, তাঁদের স্বপ্নপূরণের প্রতি উৎসাহিত করেন, এবং নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন। একজন ভালো শিক্ষক কেবল পাঠদানেই থেমে থাকেন না; তিনি শিক্ষার্থীদের জীবন সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা প্রদান করেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদের মাঝে জীবনের বিভিন্ন গুণাবলি, যেমন সততা, ন্যায়পরায়ণতা, এবং দায়িত্বশীলতার মূলে পৌঁছাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। 

বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষকদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। তাঁরা আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে যেভাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ত্যাগ স্বীকার করেন, তা আমাদের কাছে এক নিঃশর্ত দায়িত্বের প্রতীক। এই মহান পেশার মানুষরা কেবল নিজেরাই উন্নতির পথ খোঁজেন না, বরং তাঁদের শিক্ষার্থীদের সফল ও সমৃদ্ধ জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে শিক্ষাদান কেবল একটি পেশা নয়; এটি একটি মানবিক দায়িত্ব, যা সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলে। এই দিনে আমাদের কর্তব্য, শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাঁদের ত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো। শিক্ষা কেবলমাত্র বইয়ের পৃষ্ঠাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি জীবনব্যাপী অভ্যাস, যা শিক্ষকরা তাদের অমূল্য অভিজ্ঞতা ও উদাহরণের মাধ্যমে আমাদের মাঝে স্থাপন করেন। 

আমাদের উচিত এই বিশেষ দিনে শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁদের সেই পরিশ্রমের মূল্যায়ন করা, যা তাঁরা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনে যুক্ত করেন। একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কাজে যেভাবে আত্মনিবেদিত থাকেন, তেমন আর কেউ নেই। তাঁদের এই ভূমিকা এবং নিঃস্বার্থ অবদানের জন্য আমাদের সমাজ, জাতি এবং সারা বিশ্ব তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

আজকের দিনে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমরা তাঁরা আমাদের জীবনে যে অমূল্য অবদান রেখেছেন, তা স্মরণ করি এবং তাঁদের প্রতি আমাদের দায়িত্বের প্রতি সচেতন হই। শিক্ষক দিবসে আমাদের প্রত্যাশা, সমাজের প্রতিটি মানুষ শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে সচেষ্ট হবে এবং শিক্ষাদান ও শিক্ষার গৌরবময় চেতনার প্রতি অটল থাকবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর।   Email:smh.mkt@brur.ac.bd

মন্তব্য করুন


 

Link copied