স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ কয়েকদিন যাবত ব্যাপক শীত বিরাজ করছে নীলফামারী জেলা জুড়ে। শীতের প্রকোপের মাঝে এমন অগ্নিকান্ডে সর্বস্ব হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৯ পরিবারের ৪০ জন শিশু-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিধ্বংসী আগুনে বসতঘর সহ সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়েছে তাদের।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) বিকাল ৩টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের দেড়ানী সুতারপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মীর্জা আবু সাইদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কম্বল, চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্য তেল, লবন, টোস্ট বিস্কুট বিতরণ করেছেন।
এদিকে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে সঠিক কোন তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে রান্না ঘরের চুলার আগুন বা বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লেগেছে। এই অগ্নিকান্ডে এলাকার বাচ্চু মামুদের ৪টি ঘর, তার ছেলেদের ২টি ঘর, প্রতিবেশী আছদ্দী মামুদের ছেলে হাফিজুলের ২টি ও শরিফুলের ২টি, তছদ্দী মামুদের ছেলে মন্টুর ২টি ঘর এবং আমদ্দী মামুদের ছেলে সাবেদ আলীর ২টি ঘর’এর সকল মালামাল সহ পুড়ে। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে পরিবারগুলো দাবি করেছে।
খবর পেয়ে রংপুর জেলার তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে দীর্ঘ ১ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে প্রায় আরও ২০-২৫ পরিবার রক্ষা পায়। পরে সৈয়দপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস দলও এসে ফিরে যায়।
আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে কান্না করতে করতে ক্ষতিগ্রস্থ বাচ্চু মামুদ বলেন, আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। ৪টি ঘরের কিছুই বাঁচাতে পারিনি। একটা গরু ও ৩টি ছাগল মরে গেছে। ধান-চাল, আসবাবপত্র ও টিভি-ফ্রিজসহ সব পুড়ে ছাই হয়েছে। আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার ঘরে নগদ ৩ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ ২টি গরু পুড়ে মারা গেছে। প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল সব শেষ। শরিফুলেরও প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে আরও ৪ টি পরিবারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, আগুনের ভয়াবহতা ব্যাপক ছিল তাই মূহুর্তে ৯টি পরিবারের ১৪টি ঘর পুড়ে গেছে। এসব পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। আমরা প্রাথমিক ভাবে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কম্বল দেয়াসহ শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফ আব্দুল্লাহ বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। কিন্তু পথে অসংখ্য স্পিড ব্রেকার থাকায় সময় বেশি লেগেছে। আগুনের সূত্র নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ বলছেন চুলার আগুন, আবার কেউ বলছেন বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। সার্বিক তদন্ত শেষে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা যাবে।