আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৪ ● ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন       আমরা কোন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে না- জাপা কো চেয়ারম্যান মোস্তফা       স্বামীর যে তিনটি আচরণে দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যায়       পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামলো ১৪ ডিগ্রিতে       বেরোবিতে ”ক্লিন ক্যাম্পাস, গ্রিন ক্যাম্পাস” ইভেন্ট অনুষ্ঠিত       

 

সৌন্দর্য সচেতনতা থেকে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম

মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, বিকাল ০৬:০৩

সিনথিয়া শারমিন ইসলাম

লাইফস্টাইল ডেস্ক:  নারীদের নির্ভরযোগ্য বিউটি পণ্য ও সৌন্দর্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বিউটি ও পার্সোনাল কেয়ার প্ল্যাটফর্ম সাজগোজ। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে সাজগোজের সিসিও ও কো-ফাউন্ডার সিনথিয়া শারমিন ইসলামের সাথে বসার সুযোগ হয়, যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে কথা বলেছেন।

সাজগোজ প্রতিষ্ঠার পেছনে কোন বিষয়গুলো তাদের অনুপ্রাণিত করেছে, এ বিষয়ে সিনথিয়া শারমিন ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সাজগোজ যখন শুরু হয়, তখন শুধু ব্যবসা দাঁড় করানোই লক্ষ্য ছিল না, আমরা এমন একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছিলাম যেখানে নারীরা বিউটি ও পার্সোনাল কেয়ার নিয়ে ধারণা পাবেন। আমরা যখন যাত্রা শুরু করি তখন বাজারে খুব বেশি পণ্য পাওয়া যেত না এবং ক্রেতারাও পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতেন না। একজন ফার্মাসিস্ট ও নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমি এই সমস্যাটি লক্ষ করি। এরপর ২০১৩ সালে কনটেন্ট সাইট হিসেবে সাজগোজ যাত্রা শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে যমুনা ফিউচার পার্কে আমাদের প্রথম আউটলেট চালু হয়। ২০১৮ সালে ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা ও ক্রেতাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আমরা সাজগোজ-কে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করি।

বাংলাদেশের অন্যান্য বিউটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সাজগোজ কেন আলাদা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমরা ক্রেতাদের ব্যক্তিগত পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করি। তাই পণ্য বিক্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে ব্যক্তিগত পছন্দের পাশাপাশি ত্বক ও চুলের ধরন অনুযায়ী কোন পণ্যটি ব্যবহার করা উচিত, সেই ব্যাপারে টিউটোরিয়াল বা বিউটি টিপসের মাধ্যমে ক্রেতাদের সচেতন করি। এই ‘কাস্টমার-ফার্স্ট’ বিজনেস মডেলই সাজগোজ-কে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।

 

সাজগোজ পার্সোনাল কেয়ার-কে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং তাদের ব্যবসার মূলমন্ত্র সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে, সিনথিয়া শারমিন ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি পার্সোনাল কেয়ার কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং এটি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ ও আত্মবিশ্বাসের জন্যও জরুরি। সাজগোজের লক্ষ্য ক্লায়েন্টদের আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন হতে সাহায্য করা এবং তাদের মাধ্যমে অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করা। আমাদের এক্সিসটিং ক্লায়েন্টদের ফিডব্যাক সবসময়ই আরও নতুন ক্লায়েন্ট আনতে ভূমিকা রেখেছে। আমরা বিশ্বাস করি, আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসেন ও আত্মবিশ্বাসী হন, তাহলে সেটি আপনার জীবনেও বিভিন্নভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আর তাই পণ্য নির্বাচন থেকে শুরু করে কনটেন্ট তৈরি-সাজগোজ পরিচালনার সব ক্ষেত্রে এই বিশ্বাসই আমাদের মূলমন্ত্র।

‘সাজগোজ অ্যানিভার্সারি সেল’ ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য এবং এর থেকে সাজগোজের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে ক্রেতারা আমাদের প্রতি যে আস্থা আর বিশ্বাস রেখেছেন, তার কৃতজ্ঞতা জানাতেই আমরা এই ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছি। এত এত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ক্রেতাদের পছন্দের টপ-কোয়ালিটি পণ্যগুলো আমরা বিশেষ ছাড়ে তাদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছি। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা আশা করছি, ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, একইসাথে তাদের মধ্যে নতুন নতুন বিউটি পণ্য নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে।

ইনোভেশন ও পার্সোনালাইজেশনে সাজগোজ কতটা গুরুত্ব দেয় ও এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি, বিশেষ করে এআই’র ব্যবহার বাড়ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো ক্রেতাদের কেনাকাটাকে আরও সহজ করতে এআই ভিত্তিক পরামর্শ দেওয়া এবং পণ্যের পরিসর বাড়িয়ে পরিবেশবান্ধব ও দেশীয় পণ্য যুক্ত করা। এ ছাড়া, আগামীতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাজগোজের নতুন আউটলেট চালু করে ক্রেতাদের আরও কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনাও আছে। 

সাজগোজের এই যাত্রায় কোন অর্জনগুলো আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জনটি হলো সাধারণ কনটেন্ট ব্লগিং সাইট থেকে সবার ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হওয়া। আমরা লরিয়াল ও রেভলনের মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডও বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি। এটি অত্যন্ত আনন্দের যে, এ পর্যন্ত আমরা ১০ লাখেরও বেশি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি, যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই আমাদের রিপিট কাস্টমার। এ ছাড়া, আইসিটি অ্যাওয়ার্ড ও দ্য ডেইলি স্টারের স্বীকৃতি ইত্যাদি সবই আমাদের অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।

সাজগোজ কীভাবে প্রতিটি গ্রাহকের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা পূরণ করছে, উত্তরে সিনথিয়া শারমিন ইসলাম বলেন, সৌন্দর্যের চাহিদা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। সাজগোজ বিভিন্ন ত্বক ও চুলের ধরনের পাশাপাশি ব্রণ, এইজিং ইত্যাদি সমস্যা বিবেচনা করে সঠিক পরামর্শ ও নির্বাচিত পণ্য রিকমেন্ড করে। আমাদের কাছে বিভিন্ন রেঞ্জের পণ্য আছে, ফলে সবাই তাদের চাহিদা মতো পণ্য কেনার সুযোগ পান। আমাদের বিউটিশিয়ান ও বিউটি এক্সপার্টরা বিজ্ঞানসম্মত পরামর্শ দিয়ে থাকে। এভাবেই আমরা সবার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন


 

Link copied