আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৪ ● ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠন       আমরা কোন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে না- জাপা কো চেয়ারম্যান মোস্তফা       স্বামীর যে তিনটি আচরণে দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যায়       পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামলো ১৪ ডিগ্রিতে       বেরোবিতে ”ক্লিন ক্যাম্পাস, গ্রিন ক্যাম্পাস” ইভেন্ট অনুষ্ঠিত       

 

হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর কান্না আজও বহমান

মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, সকাল ০৮:৩৩

ডেস্ক: আজকের দিনে এদেশের জনসাধারণের আরেকবার উপলব্ধি-‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা/কারোর দানে পাওয়া নয়।/দাম দিছি প্রাণ লক্ষ কোটি/জানা আছে জগৎময়।’ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ আজ শ্রেষ্ঠসন্তানদের স্মরণ করবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলার মানুষের ওপর পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে বাঙালি হত্যা, মাইলের পর মাইল ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভৌত অবকাঠামো ধ্বংস করা, নারীদের সম্ভ্রমহানি-সবকিছুই করেছে তারা। কিন্তু বাঙালির রণকৌশলের কাছে তারা টিকতে পারছিল না। তাই বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সদস্যরা বাংলার শ্রেষ্ঠসন্তানদের নিধনে মাঠে নামে। রাতের অন্ধকারে বাসা অথবা কর্মস্থল থেকে শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে তারা হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করা।

দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চললেও মূল হত্যাযজ্ঞ চলে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখা হয়। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরপরই বুদ্ধিজীবীদের নিকটাত্মীয়রা বধ্যভূমিতে অনেকের লাশ খুঁজে পান। তাদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা। কারও কারও শরীরে একাধিক গুলিও ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে অনেককে হত্যা করা হয়েছিল। ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকের লাশ আবার তাদের প্রিয়জনরা শনাক্তও করতে পারেননি।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন-অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. মোহাম্মদ মুর্তজা, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য, ডা. মোহাম্মদ শফি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমদ, খোন্দকার আবু তালেব, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, সৈয়দ নাজমুল হক, জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদ, ড. আবদুল খায়ের, ড. সিরাজুল হক খান, ড. ফয়জল মহী, ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভিন, কবি মেহেরুন্নেসা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ প্রমুখ।

চার দশক পর ঘাতকদের বিচার শুরু হয়। ইতোমধ্যে মিরপুরের কসাই নামে খ্যাত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছে। আলবদর নেতা ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অন্যদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার এখনো শেষ হয়নি। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অন্য ঘাতকদের বিচার চলছে। এবারের বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতিকে পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত করার শপথ নেবে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ।

মন্তব্য করুন


 

Link copied