মমিনুল ইসলাম রিপন: বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, অনেকেই অনেক রকম কথা বলবেন, জিএনজিরা হয়তো বলবেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্পস্ট ভাষায় বলতে হবে, ১৯৪৭ না হলে ১৯৭১ হতো, ৯০ না হলে ২০২৪ এর ৫ আগস্ট হতো না। তাই অতিত কে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে নতুন ভাবে। তবে অতিত কে ভুলে যাওয়া যাবে না। তাহলে অতিতের মতোই অবস্থা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি'র উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, নিজের দুই নাবালক সন্তানের কথা ও সহধর্মীনির কথা চিন্তা না করে, শুধুমাত্র দেশের কথা চিন্তা করে একজন মেজর হয়ে শহীদ জিয়া কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুধু ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেননি। তিনি নিজে যুদ্ধ করেছেন। শহীদ জিয়া যখন ঘোষণা করেন, তখন তিনি সিনিয়র মেজর ছিলেন। অথচ তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে বৈষম্যের শিকার হলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর একটি দিশাহীন জাতিকে দিশার জন্য সিপাহী ও জনতা মিলে শহীদ জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন, উনি নিজে অধিষ্টিত হন নাই। বিএনপি মানেই জনগণ। শহীদ জিয়ার বক্তব্য ছিলো জনগনই সকল শক্তির উৎস। ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এজন্যই বিএনপি জনগনের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। ৫ আগস্টের তিনদিন আগে এক নেত্রী বলেছিলো অমুকের বেটি কখনও পালায় না। অথচ তিনদিন পরেই ঘটলো উল্টোটা। তাই বলতে হবে, আমরা অসীম না, আল্লাহ তায়ালা অসীম। আমরা ক্ষমতাশালী না, ক্ষমতাশালী হলো জনগণ। তাই জনগণকে সামনে রেখে জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারে।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা সংখ্যাগুরু না, সংখ্যা লঘুও না। আমরা বাংলাদেশী। কাজেই এই বাংলাদেশ এগিয়ে নিতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। জাতির মধ্যে বিভাজন থাকলে এগুনো সম্ভব না। সবাইকে এক করতে না পারলে এগুনোর সময় কেউ পিছনে পরবে কেউ সামনে এগিয়ে যাবে। যেমন পতিত স্বৈরাচার সরকার মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে মেগা দুর্নীতি করেছে। এক শ্রেণি এগিয়ে গেছে অন্য শ্রেণি পিছনে পরেছে।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কার সবসময় চলমান প্রক্রিয়া। এক প্রজন্ম থেকে সামনের প্রজন্ম সব প্রজন্মের আলাদা চাহিদা থাকে। তাই জনগণের চাহিদাই সংস্কারের শর্তপুরণ। এজন্য ড. কামাল হোসেন বলেছেন কলমের খোঁচায় সংবিধান সংস্কার করা যায় না। জনগণকে সাথে নিয়ে সংস্কার করতে হয়। এজন্যই আমাদের দেশনায়ক তারেক জিয়া ৩১ দফা দিয়েছেন। আমরা সেই ৩১ দফা নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। জনগণকে বুঝাচ্ছে, জনগণ আগামীর কেমন বাংলাদেশ চায়। বিএনপির উদ্দেশ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, মানবধিকার প্রতিষ্ঠা করা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে, অন্যায়ের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই করতে হবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটি পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু’র সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমাজ ও রাজনীতি বিশ্লষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ সাইফুল ইসলাম। পুরো অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আনিছুর রহমান লাকু ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব, এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন। আলোচনা সভায় বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগি দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।