আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ● ২৪ মাঘ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আজ শিক্ষক দিবস:আমার ভাবনা

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২, দুপুর ১২:৫০

শেখ মাজেদুল হক

শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রুপান্তর শুরু " [The transformation of education begins with teachers ] এই প্রতিপাদ্য নিয়েই আজ সারা দেশে ২৭ অক্টোবর  পালিত হচ্ছে জাতীয় শিক্ষক শিক্ষক দিবস ২০২২। সর্বস্তরের শিক্ষকের মর্যাদা বৃদ্ধির সাথে সাথে এগিয়ে যাক দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার মান।

গত ৫ অক্টোবর ছিল বিশ্ব শিক্ষক দিবস।বাংলাদেশ দিবসটি পালন করে ২৭ অক্টোবর। শিক্ষকদের অবদান স্মরণ করতেই বাংলাদেশ দিবসটি পালন করে।  দিনটি ‘ওয়ার্ল্ড টিচার্স ডে’, ‘ইন্টারন্যাশনাল টিচার্স ডে’ বা ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস’ নানা নামে পরিচিত। শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। অন্যভাবে বললে, শিক্ষক-সমাজকে সম্মানিত এবং তাদের ত্যাগের বিষয়টি সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়াই দিবসটির মূল লক্ষ্য। শিক্ষকদের অধিকার আদায় ও সম্মাননা হিসেবেও দিবসটি মূল্যায়িত হয়। পরবর্তী প্রজন্মও যাতে কার্যকরী ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এই দিনটি পালন করে, সেটাও উদ্দেশ্য। পৃথিবীর সব দেশে বিশেষ মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়। ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেসকোর ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ অক্টোবর ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। ইউনেসকো প্রতিবছর শিক্ষকদের সম্পর্কে বিশ্বকে আরও ভালোভাবে বোঝাতে এবং শিক্ষার্থীদের বিকাশের ওপর তাদের প্রভাবের গুরুত্ব তুলে ধরতে নানা ধরনের ক্যাম্পেইন করে। অবশ্য ইউনেসকো ১৯৬৬ সালে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে শিক্ষকদের অবস্থা নিয়ে আন্তঃসরকার সম্মেলন হয়েছিল। সেখানেই শিক্ষকদের কথা চিন্তা করে ইউনেসকো এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কিছু পরামর্শে স্বাক্ষর করে। প্রথমবারের মতো এসব পরামর্শে শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব এবং বিশ্বব্যাপী শিক্ষকতা পেশার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হলো- ‘The transformation of education begins with teachers.’ অর্থাৎ ‘ শিক্ষকদের দিয়েই শিক্ষার রূপান্তর শুরু।’ 

মানুষের মধ্যে যেসব গুণ রয়েছে—শিক্ষা সেগুলোকে বিকশিত করে। শিক্ষা মানবজীবনকে পরিশীলিত করে। তাই শিক্ষা জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির ধারক ও বাহক। এজন্য শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। শিক্ষা কথাটি এলেই প্রথমে যে কথাটি আসে তা হলো শিক্ষক। শিক্ষক হলো শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র। কেননা, শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত উত্কর্ষ নির্ভর করে শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতা, নিষ্ঠা ও প্রচেষ্টার ওপর। মেধাবী ও নিষ্ঠাবান শিক্ষকগণই মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের সংকট উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।এই শিক্ষক দিবসে দাঁড়িয়ে যদি জিগ্যেস করি কেমন আছেন আমাদের শিক্ষক সমাজ। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে শিক্ষক সমাজ এখনো অর্থনৈতিক পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। শিক্ষকদের অবস্থা আজও অত্যন্ত নাজুক, সামাজিকভাবে তো বটেই, পেশাগতভাবেও। বেসরকারি (এমপিওভুক্ত) শিক্ষকগণ আরো অবহেলিত। এ দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে ২৬ হাজার বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারীর অবস্থা আরো নাজুক। অনেক প্রতিষ্ঠানেই নেই লাইব্রেরি, নেই গবেষণাগার ও খেলার মাঠ। যেসব প্রতিষ্ঠানে আছে তাও মানসম্মত নয়। নেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ ও আসবাবপত্র। অনেক প্রতিষ্ঠান হয়নি এমপিওভুক্ত। আবার অনেক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানেরও সব শিক্ষক এমপিওভুক্ত নন। এদের অবস্থা আরো করুণ। যেসব শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশ চাকরির শুরু থেকেও এমপিওভুক্ত হননি। অথচ এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির অভিজ্ঞতা হিসেব করা হয়। বছরের পর বছর বেতন না পাওয়া অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষা দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এমনকি এমপিওভুক্ত হওয়ার আগেই অবসরে যান অনেক শিক্ষক।

এই দিনটিতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্পর্কটি তাদের সাথে সাক্ষাত করে বা তাদের বার্তাকে স্মরণীয় করে রাখার মাধ্যমে উপভোগ করা যেতে পারে যাতে তাদের দিনটি স্মরণীয় হয়ে যায়। শিক্ষকদের দিনের প্রাক্কালে শিক্ষকদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়। মেধাবী শিক্ষকদের পুরষ্কার দেওয়া উচিত। শতাধিক দেশ বিশ্ব শিক্ষক ’দিবস উদযাপন করে এবং প্রতিটি নিজস্বভাবে উদযাপন করে।

 আগামীতে শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীদের অনেকে আসতে চাইবে না। আমাদের এখনই সময় এসেছে, এই পেশার সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। শিক্ষকেরা আগামীতেও যাতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেই জন্য বিভিন্ন বীমা, বিশেষ ঋণ সহায়তা দিয়ে পেশার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী শিক্ষকদের বেতন সুনির্দিষ্ট করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। শিক্ষকেরা যেন বেতন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে তা ভাবতে হবে। সময়ের সঙ্গে জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনা করে তাদের বেতনের মানদণ্ড মানসম্মত করতে হবে। শিক্ষা সময়ের সেরা বিনিয়োগের ক্ষেত্র। সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বা স্থায়ী উন্নয়নের জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। ভারতের নোবেল জয়ী শিক্ষাবিদ কৈলাশ সত্যার্থী বলেন, শিক্ষায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ১৫ গুন রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। ফলে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীদের স্বচ্ছ ও যুগোপযোগী মূল্যায়নের মাধ্যমে এই পেশায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে।

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পৃথিবী প্রতি সেকেন্ডে বদলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের ও বদলাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। একজন শিক্ষক আজকেই আগামী দশকের সুযোগ ও সমস্যা মোকাবিলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করছেন। ফলে শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ, সিম্পোজিয়াম ও কর্মশালার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষকদের আত্মোন্নয়নের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠান গুরুত্ব দিতে হবে। অধিকাংশ শিক্ষকই মনে করেন তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের দরকার। করোনার মতো যেকোনো মহামারি মোকাবিলায় শিক্ষকদের আগে থেকে প্রস্তুত রাখতে হবে, এর জন্য প্রশিক্ষণ খুব দরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উপাদান হলো শিক্ষার্থী। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো শিক্ষক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য অভিভাবকের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক সফলতা পেতে হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। পরস্পর পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, আন্তরিকতা ও আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে। নিয়মিত পারস্পরিক শিক্ষক-অভিভাবক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষা আনন্দদায়ক হোক এটা সবার প্রত্যাশা। কিন্তু শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করার জন্য আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করি। আমাদের শিক্ষাক্রমেও শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের চাপ কমানোর জন্য নানান পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাবতে হবে, শিক্ষকদেরকেও চাপমুক্ত রাখতে হবে। বাংলাদেশের প্রাথমিকের শিক্ষকদের শিক্ষকতার পাশাপাশি অনেক জরীপ কাজে অংশ নিতে হয়। অন্যান্য শিক্ষকদের শিক্ষণের পাশাপাশি অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। যেমন: বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাও একজন শিক্ষককে দেখতে হয়। একজন শিক্ষকই প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র ,ফাইল নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তরে ঘুরতে হয়। ফলে একজন শিক্ষক তার মূল কাজ থেকে অনেক সময়ই বিচ্যুতি হয়ে যান। ফলে শিক্ষকদের চাপমুক্ত রেখে শিক্ষাদান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের বিভিন্ন রিক্রেয়শন লিভের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকের মানসিক প্রশান্তির জন্য বিদ্যালয় থেকে নানা উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন: মানসিক দক্ষতা নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা করা। শিক্ষকতায় স্বীকৃতি খুব গুরুত্বপূর্ণ মোটিভেশন হিসেবে কাজ করে। ফলে শিক্ষকদের প্রতিটি কাজের স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ইদানীং অনেক প্রতিষ্ঠানই শিক্ষকদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করে থাকে। যেমন: বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষকদের উদ্ভাবন এবং কাজের স্বীকৃতি প্রদান করতে পারে।

নাগরিকদের উপযুক্ত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আর এই দায়িত্বের কার্যকর দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা শুধু পড়ালেখা শেখানোই নয়, পাশাপাশি জীবনে সফল হতে নানা উপদেশ দেয়া, নৈতিকতা শেখানো, প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করতে শেখানোও খুব যত্নের সঙ্গে করে থাকেন। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেই বুঝতে পেরেছিলেন শিক্ষাই হলো মুক্তির হাতিয়ার। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করে আমরা দেখতে পাই, প্রকৃত শিক্ষাই পারে মানবমুক্তির পথের সন্ধান দিতে। তার লক্ষ্যই ছিল শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার ধারণাটি প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধু বাস্তবায়ন করেছিলেন কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন। যেটা ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক বৈজ্ঞানিক শিক্ষাব্যবস্থার রূপরেখা।বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। তাই তিনি বলেন, ত্যাগ ও নিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষকে ভালোবেসে অকৃপণভাবে মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারে শিক্ষক-সমাজ। জাতির পিতা শিক্ষা ও শিক্ষককে অনেক বড় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত ও অধিষ্ঠিত করেছিলেন। শিক্ষকদের সীমিত আকারে হলেও সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন। বর্তমানেও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন শিক্ষকদের মুক্তির হাতিয়ার। এ নীতি ও আদর্শে সব শিক্ষককে দীক্ষিত করে তুলতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে শিক্ষক এবং শিক্ষাদান প্রক্রিয়া একে অপরের পরিপূরক হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত একটি বিষয়। সে কারণে বিশ্বব্যাপী শিক্ষকতা পেশার পরিচর্যার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে। শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং পেশাকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বেতন-আবাসন, প্রশিক্ষণ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মপরিবেশ উন্নত করার ওপর ইউনেসকো জোর সুপারিশ করে চলছে। আজকের শিক্ষকেরা আগামীর বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন হবে না। ফলে শিক্ষকের দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাধীনতা ও সম্মানের বিষয়ে যত্নশীল হওয়ার মাধ্যমেই আগামীর স্বনির্ভর ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

শিক্ষকদের যেমন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থাকতে হবে, তেমনি শিক্ষার মানের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপোস করা যাবে না। বেসরকারি শিক্ষকরা চান অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, বৈষম্যহীন আচরণ ও শিক্ষার মান উন্নীতকরণ। সরকার শিক্ষকদের এসব চাহিদা পূরণ করলে শিক্ষার মানের ওপর ধণাত্মক প্রভাব পড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি। যে কোনো পর্যায়ের শিক্ষকদেরই সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে হবে। সেজন্য শিক্ষকদের নিজেদের যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এ দায়িত্ব যত সঠিকভাবে পালিত হবে, সমাজ ও দেশও সেভাবে পরিচালিত হবে। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে জয় হউক মানবতার, জয় শিক্ষা ব্যবস্থার,জয় হউক শিক্ষকতা পেশার, মূল্যায়ন হউক সৃজনশীল মানুষ গড়ার কারিগরদের, উদ্দেশ্য সাধন হউক সহস্রকোটি শিক্ষার্থীদের, যাদের জ্ঞানের আলোতে ভরে উঠবে বিশ্ব।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, মার্কেটিং বিভাগ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর।

 

মন্তব্য করুন


Link copied