লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।
পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হুমকি প্রদানের ঘটনায় নারী বহিস্কৃত প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে গ্রেপ্তারের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে যৌথ বাহিনী ও পুলিশের সহতায় তাকে লালমনিরহাট জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বাহিষ্কৃত এই প্রভাষক লালমনির বুড়িমারী মহাসড়কের কালীগঞ্জ থানার সামনে অনশনে করছিল। ওই সময় হাতীবান্ধা থানার ওসিকে লাঞ্ছিত ও পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়। একইসঙ্গে বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি প্রদান করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা ঘেরাও করেছে বিক্ষিপ্ত জনতা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুর থেকেই লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের কালীগঞ্জ থানার সামনে কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপার প্রসারণের দাবিতে মহাসড়কের অনশনে বসেন। ওই সময় তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বহিস্কৃত প্রভাষক তামান্নাকে অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই সময়ে বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে লালমনিরহাট সদর দপ্তর থেকে মিটিং শেষ করে হাতীবান্ধার ওসি মাহমুদুন্নবীসহ কয়েকজন কনস্টেবল হাতীবান্ধা থানার দিকে যাচ্ছিলেন। পরে পুলিশের গাড়ি পথরোধ করে গাড়িতে লাথি ও গ্লাসে আঘাত করেন। একপর্যায়ে প্রতি গাড়ি থেকে নেমে আসলে তার কলার ধরে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় বিক্ষিপ্ত জনতারা পুলিশকে লাঞ্ছিত ও বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হুমকি প্রদানের অভিযোগ তুলে তামান্নাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পরে নিরাপত্তার সাথে বালিগঞ্জ থানায় তামান্নাকে নিয়ে যান। এ সময় বিক্ষপ্ত জনতা প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানা ঘেরাও করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেনাবাহিনীর একটি টিম কালীগঞ্জ থানায় আসেন। পরে রাত দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার ও পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় বৈষম্য আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হুমকি প্রদানের ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় বৈষম্য আন্দোলনের জেলা সংগঠনক রাতিলুল হাসান বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ওসিকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন্নবী বলেন, জেলা সদর দপ্তরের মিটিং শেষেই হাতীবান্ধা ফিরছিলাম। হঠাৎ যানজট দেখে কালীগঞ্জ থানার সামনে গাড়ি নিয়ে গেলে গাড়ির উপর ভাঙচুর ও আমার ওপর আক্রমণ চালায়। এখন আমাকে লাঞ্চিত করে। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমি আপাতত সাধারণ ডায়েরি করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের কিছুই করণীয় নেই। তবে তিনি কয়েকদিন থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করেছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন বলেও জানান তিনি।
কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক বলেন, নিরাপত্তা স্বার্থে প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। বিক্ষপ্ত জনতারা বাহিরে মিছিল করছেন। পরে বৈষম্য আন্দোলনের জেলার সংগঠনক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের হামলা ও ওসিকে লাঞ্চিত করার ঘটনাও মামলার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও তিনি জানান। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।