আর্কাইভ  বুধবার ● ১২ মার্চ ২০২৫ ● ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১
আর্কাইভ   বুধবার ● ১২ মার্চ ২০২৫

বেরোবি ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মত ফুটেছে মহাবিপন্ন উদাল ফুল

বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকাল ০৬:৩৮

বেরোবি প্রতিনিধি :  রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হাজারো ফুল-ফলের গাছের ভিড়ে প্রথমবারের মত ফুটেছে উদাল ফুল। ওষুধি গুণে ভরা উদালের দেখা মেলে না সহজে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী এ উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্পাসে এই ফুলের দেখা মিলেছে। 

এই গাছটি সম্পর্কে জানা গেছে, ২০ মিটার বা ততোধিক উঁচু পত্রমোচী মাথা ছড়ানো প্রজাতির একটি গাছ। এদের বাকল সাদাটে রঙের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগা ঘনবদ্ধ। এদের নিষ্পত্র শাখার লম্বা ও ঝুলন্ত ডাঁটায় অনেকগুলো ফুল ধরে। ফুল পুংলিঙ্গ ও উভয়লিঙ্গ হয়ে থাকে। ফুল ১ দশমিক ৫ সেমি চওড়া। ফুলগুলো সোনালি হলুদ রঙের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এই গাছের বড় বড় একাধিক বীজ হয়ে থাকে এবং বীজের রং কালো। 

উদাল গাছের কাঠ বাদামি রংয়ের এবং  নরম ও হালকা হয়ে থাকে। এই গাছের কাঠ দিয়ে চা বাক্স বানানো হয়। এই গাছের বাকল থেকে এক ধরনের আঁশ পাওয়া যায়। সেই আঁশ দিয়ে মোটা রশি তৈরি করা যায়।  উদালের বাকলের শরবত শরীর ঠান্ড রাখে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে পানির সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রসাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। এর বোটাতে এক ধরনের জেলি জাতীয় পদার্থ থাকে যা দুর্বল শরীরকে সতেজ করতে বেশ উপকারী।

উদাল ছাড়াও  বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দেখা যাবে ঘোড়া চাবুক, তেলসুর, ঢাকিজাম, টেবেবুইয়া, হলদু, ছোটহলদু, ইটোরিয়া, ঝুমকাভাদি, কাঞ্চনভাদি, চুন্দুল, বান্দরহুলা, নহিচিচি, উদাল, হিজল, কর্পুর, জাবাটিকাবা, সুলতানচাঁপা, বিলম্বী, গুস্তাভা, রুদ্রপলাশ, হলুদ পলাশ, স্বর্ণচাঁপা, বক্সবাদাম, জাকারান্ডা, সুন্দরী, কানাইডিঙা, মণিমালা, বাজনা, নাগেশ্বর, কফি, হিমজুড়ি, রক্তন, কুরচি, জাতবাটনা, আগর, রিঠা, লোহা, পীতরাজ, বলচ, ব্রেডফ্রুট, গুটগুইট্টা, তমাল, কুম্ভি, ধারমারা, রসকাউ, পাদাউক, তেজমাটাম, কণকচূড়া, পুত্রঞ্জীব, রুদ্রাক্ষ, উড়আম, হৈমন্তী, সিভিট, বাবলা, লালসোনাইল, পালাম, মাইলাম, কুসুম, ছোটহরিণা, কুচিলা, ক্ষুদিজম, রেডবীচহিবিসকাস, অটোগ্রাফট্রি, কোরাল উড, ডাম্বিয়া, ওসেজঅরেঞ্জ, অ্যাসট্রি আমেরিকান, কুইনাল, খিলখেজুর, হাতিবেল, বাওবাব, চায়নাডল প্রভৃতি দুর্লভ গাছ রয়েছে।  

বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলাবিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিন বছর আগে উদালের চারা এনে লাগিয়েছিলাম। তিন বছরেই উদালে ফুল ফুটেছে। এই গাছটি বিপন্নদের তালিকায়। এর সংরক্ষণে যথযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিত। উদাল বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, নেপাল, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়ায় দেখা যায়। তবে কম। 

মন্তব্য করুন


Link copied