নিউজ ডেস্ক: ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন যশোরের একটি আদালত।
সোমবার (১৭ মার্চ) সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দিয়েছেন।
এছাড়া পৃথক আরেকটি আবেদনের প্রেক্ষিতে তন্দ্রা ভট্টাচার্যের আয়করের মূল নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। খুলনা কর অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস সার্কেল-৮ যশোরকে তন্দ্রা ভট্টাচার্যের মূলনথি সংগ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদুকের পিপি সিরাজুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একটি করে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের যোগসাজশে স্বপন ভট্টচার্য জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯১ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়াও দশটি ব্যাংক হিসাবে দশ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার পাঁচশ’ ৮৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য গোপন করার জন্য রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তন্দ্রা ভট্টাচার্য।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানান আদালতে। বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
একই দিন স্বপন ভট্টাচার্য্যকে আসামি করে আরও একটি মামলা করে দুদক। এ মামলায় উল্লেখ করা হয়, দুই কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার একশ’ ৫১ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে স্বপন ভট্টাচার্য্যরে। এছাড়া নিজের নামে ১৯টি ব্যাংক হিসাবে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার তিনশ’ ৩৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী দুর্নীতি ও ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে পাওয়া অর্থ গোপন করার উদ্দেশ্যে এর রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের ভোটারবিহীন নির্বাচনে এমপি মনোনীত হয়েছিলেন। সর্বশেষ সাজানো নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়েও বিজয়ী হতে পারেননি। পাতানো এই নির্বাচনে তারই দলের তরুণ নেতা এসএম ইয়াকুব আলীর ‘ম্যাকানিজমের’ কাছে তার ভরাডুবি হয়েছিল।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার, নির্যাতনেরও গুরুতর অভিযোগ আছে। তার এই অপকর্মের সাথে স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য ও ছেলে শুভও জড়িত। সে কারণে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পাতানো নির্বাচনে মণিরামপুরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে ইয়াকুব আলীকে বেছে নেন।