বিশেষ প্রতিনিধি॥ অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করতে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) রুহুল মোছাদ্দেকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বিভিন্ন মামলার আসামী খাদ্য বান্ধন কর্মসুচির ডিলার পলাতক থাকায় তাদের ডিলারশীপ বাতিল না করে তিনি তার ঘনিষ্ট একজনকে দিয়ে ওই সকল ডিলারশীপ পরিচালনা করছেন। এছাড়া ওএমএসের ডিলারশীপ প্রদানের নামে স্থানীয় ব্যবসায়ী জহির উদ্দিনের নিকট থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা হাওলাদের কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের টিসিবি নিয়োগের কথা বলে বন্দর খগাখড়িবাড়ী গ্রামের নওয়াব আলীর কাছ থেকে নগদ নম্বরে ১৫ হাজার ও হাতে ২০ হাজার টাকা সহ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর সুত্র জানায়, এই জন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করে সাত কর্মদিবসে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৪২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়। ডিলার নিয়োগের সময় অধিকাংশ ডিলার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ পদবীর নেতা। দেশের পট পরিবর্তনে আওয়ামীলীগের পদ পদবীতে থাকা অনেক ডিলার মামলার আসামী হয়ে গাঁ ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এতে ঝুঁকিতে পড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে তাদেরকে বাতিলের হুমকি দিয়ে কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এরমধ্যে হাসানুর রহমান শাহ নামের একজন ডিলারের মৃত্যু ঘটে এবং ৪ জন ডিলার উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির নেতৃত্ব পদে থাকায় গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য বান্ধবের ওই সকল নেতাদের ডিলার নিয়োগ বাতিল না বর্তমানেও তিনি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে থাকা ও আওয়ামীপন্থী ডিলারদের পুনর্বাসন করার জন্য গোপনে ওই সকল আওয়ামী লীগ নেতা ডিলারদের সাথে আঁতাত করে তাদের নামে চাল উত্তোলন করছেন।
ঘটনাটি ফাঁস হয়ে পড়লে উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উক্ত কর্মকর্তার বিচার ও অপসারনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলার মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান রাশেদ অভিযোগ করে বলেন, ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোছাদ্দেক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের নেতাদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তিনি ডিমলা উপজেলার পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এজেন্ডা হিসেবে কাজ করছেন। যে সকল আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে ডিলারশীপ রয়েছে তাদের ডিলারশীপ বাতিল ও উক্ত কর্মকর্তার বিচার এবং অপসারনের দাবি করেন।
এ অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোছাদ্দেক বলেন, আমাকে একটি মহল মিথ্যে অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সৈয়দ আতিকুল হক জানান, এ ঘটনায় নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) তহিদুল ইসলামকে এক সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে সাত কর্মদিবসে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ প্রদান করা হয়েছে।