আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ● ১১ বৈশাখ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৫

যৌন হয়রানির অভিযোগ আর প্রক্টরের বক্তব্য ঘিরে উত্তাল বেরোবি

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, রাত ১২:০০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের প্রশাসনের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি এবং বরখাস্তের দাবিতে মশাল মিছিল এবং তাদের কুশপুত্তলিকায় জুতা মারার কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করার সময়ে প্রক্টরের দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্যেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। সোমবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যৌন নিপীড়ক শিক্ষকদের কুশপুত্তলিকায় জুতা মারার কর্মসূচি এবং সন্ধ্যা ৭টায় মশাল মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘যে যৌন হয়রানির শিকার সেও মজা নিয়েছে, পরীক্ষায় মার্কও নিয়েছে।’ প্রক্টরের দেওয়া এমন বিতর্কিত বক্তব্যে ক্ষোভ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, দোষীদের বাঁচিয়ে দিতেই দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল ‘সাদিয়া সুভা’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। এতে শিক্ষক তানজিউল ইসলাম এবং বর্ষা নামে ছাত্রীর ফোনালাপে কুপ্রস্তাবের শর্তে সিজিপিএ বৃদ্ধির কথা শোনা যায়।

১৭ এপ্রিল পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ এবং অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নাম্বার টেম্পারিংয়ের অভিযোগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর কাছে জমা দেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (১২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা। ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে শিক্ষক রশীদুল এবং তার ছাত্রীর মেসেঞ্জারে কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফাঁস হলে ক্যাম্পাসে আলোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় ২১ এপ্রিল উল্লিখিত কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে ‘অডিও ক্লিপ এবং সংশ্লিষ্ট অভিযোগগুলোর বিষয়ে ফরেনসিক পরীক্ষাসহ নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত পরিচালনা করা, তদন্ত চলাকালীন ড. মো. তানজিউলকে সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাকে অধিকতর স্বচ্ছ, ডিজিটাল ও প্রযুক্তিনির্ভর করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে শক্তিশালী ‘একাডেমিক মনিটরিং সেল’ গঠন রয়েছে।

বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘ভিডিওটির কথাগুলো ভালো করে শোনেন আগে। এখানে আমি বুঝাতে চেয়েছি যেসব আইডি থেকে ছড়ানো হয়েছে সেগুলো ফেক। ভিডিওতে মজা নেওয়া বলতে ফেক আইডি থেকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লিখে মজা নেওয়াকে বোঝানো হয়েছে।’

অভিযুক্ত শিক্ষক রশিদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও শিক্ষক ড. তানজিউল বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চলতেছে। অডিও ক্লিপগুলো পুরোপুরি সত্য নয়।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, নাম্বার টেম্পারিং এবং যৌন হয়রানির বিষয়ে নতুন অভিযোগ সেল গঠন করেছি। কেউ পরিচয় গোপন করতে চাইলে তার পরিচয় প্রকাশ না করেই অপরাধীর ব্যবস্থা নেব।

অডিও ক্লিপের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিষয়টা তদন্তের জন্য আবেদন করলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।’

মন্তব্য করুন


Link copied