স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, বাস্তবিক পক্ষে তারেক রহমানের সংস্কার প্রস্তাব টুকু আজকে সমাজে সমাদৃত হয়েছে। জনগন গ্রহণ করেছে, সরকার গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এই প্রস্তাবটা উনি এমনভাবে দিয়েছেন যেন ভবিষ্যৎ রাজনীতিটা এক ব্যক্তি বা দলের হাতে না থাকে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত ৩১ দফা ও জন সম্পৃক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অংশ নেতা নীলফামারী ও সৈয়দপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহনের উদ্ধোধন কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমরা যারা শরিক হয়েছি, যুগপৎ আন্দোলন করেছি সবাই মিলে যদি আমরা জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করি, তাহলে আমাদের এই দেশে একটা স্বাভাবিক রাজনীতির পরিবেশ আসবে। স্বাভাবিক সমাজ ব্যবস্থা আমাদের মধ্যে তৈরি হবে। আওয়ামীলীগ কখনও স্বাভাবিক রাজনীতি করে নি। সমাজ গড়ে উঠবে সেটা চিন্তা করে নি। স্বাধীনতার পরে আমরা দেখেছি রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার। দুর্নীতি দুঃশাসন ছিল আকাশচুম্বি।
আওয়ামীলীগে রাজনীতি নিয়ে এ্যানি বলেন, তাদের রাজনীতিতে ভুল শুধরে নিয়ে কখনো নতুন আলোকে আসবে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তারা রাজনীতি করবে। তাদের আচরণে, তাদের দলের কোন কাজে, তাদের নেতার কোন নেতৃত্বে আমরা সেটি ল্য করি নাই। যিনি তাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এই ফ্যাসিবাদ ভোটে কখনো নির্বাচিত হতে পারে নাই। ভোট ছাড়াই একদলীয় শাসন, একব্যক্তির শাসন কায়েম করেছিল।
তারেক রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ রূপে এমনভাবে মানুষকে জিম্মি করেছিল যেখানে কথা বলার সুযোগ ছিল না। আর আমরা কথা বলতে পারি নাই বলেই আন্দোলনকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। তারেক রহমান দেশের বাইরে ছিলেন। দেশের বাইরে থেকেও তিনি সমগ্র জাতিকে, পুরো বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন একটা আন্দোলন তৈরি করেছিলেন। যে আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, যেই রাজনীতি আমরা সাংগঠনিক কাজ করতে পারি নাই, যেই রাজনীতি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারি নাই। যেহেতু আমরা সার্বক্ষণিকভাবে আন্দোলনে ছিলাম। জেলে থেকে পালিয়ে থেকে, মাঠে থেকে। তারপরেও আমরা সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি রেখেছি। এক মুহূর্তের জন্য আমরা আন্দোলন থেকে পিছপা হই নাই। আজকে আমাদের সুযোগ এসেছে পাঁচ তারিখের পর সংগঠন নিয়ে চিন্তা করা। দেশকে নিয়ে চিন্তা করা। জাতীকে নিয়ে চিন্তা করা। এই সুযোগটি আমরা গ্রহন করতে চাই। এই সুযোগটি গ্রহন করতে হলে এই একত্রিশ দফাকে আরও বেশি জনপ্রিয় করে বাংলাদেশের মানুষের সামনে নিয়ে আসতে হবে। যেন আগামী শাসনব্যবস্থায় জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এদেশের সরকার পরিচালিত হয়।
কর্মশালায় জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জহুরুল আলমের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন জবি উল্লাহ, বিএনপির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, ত্রান ও দুর্যোগ বিষয়ক সহ-সমপাদক অ্যাড. নেওয়াজ হালিমা, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাঈফ মাহমুদ জুয়েল, স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাড. মিজানুর রহমান চৌধুরী বক্তৃতা দেন।