হাসানুজ্জামান হাসান: লালমনি এক্সপ্রেস ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত অনির্দিষ্টকালে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদ।
সোমবার(২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে দ্বিতীয় দিনের মত অবরোধ করে রাখে স্থানীয়রা। এতে উভয় পাশে প্রায় চার কিলোমিটার পথে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানান, দেশের মানচিত্রে একমাত্র দীর্ঘ লম্বা জেলা লালমনিরহাট। একশত কিলোমিটার রেলপথ ও একশত কিলোমিটার সড়ক পথেই রয়েছে জেলার ৫টি উপজেলা। যার এক প্রান্তে সদর তথা জেলা শহর আর অপর প্রান্তে রয়েছে সর্বশেষের উপজেলা পাটগ্রাম। শেষ প্রান্তের উপজেলায় রয়েছে ত্রি দেশিয় বাণিজ্য কেন্দ্র বুড়িমারী স্থলবন্দর। বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪টি বিভাগীয় সদর দপ্তরের মধ্যে লালমনিরহাট একটি। রেলওয়ের বিভাগীয় শহর লালমনিরহাট জেলার যাত্রীদের জন্য দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে। একটি লালমনি এক্সপ্রেস। যা লালমনিরহাট শহর স্টেশন থেকে যাত্রা করে। অপর টি বুড়িমারী এক্সপ্রেস। যা বুড়িমারী থেকে যাত্রা শুরু করার কথা থাকলেও উদ্বোধনী দিনের পর থেকে আর ট্রেনটির দেখা পায়নি জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ।
লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে বুড়িমারী স্টেশনের দুরুত্ব প্রায় একশত কিলোমিটার। ফলে এই দীর্ঘ পথ মাড়িয়ে জেলা সদরে এসে এসব আন্তঃনগর ট্রেন পেতে হয় জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ। এ কারনে আন্তঃনগর ট্রেন দুইটির সেবা বঞ্চিত রয়েছে ৪টি উপজেলা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এবং পাসপোর্ট ধারী যাত্রীরা।
এ কারনে জেলাবাসীর জন্য দেয়া আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবি করে আসছে জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ। যার জন্য টানা ৪দিন ধরে রেলপথ অবরোধ কর্মসুচি পালন করছে স্থানীয়রা। এ ছাড়াও দীর্ঘ আন্দোলনে নানান কর্মসুচি পালন করেছেন তারা। আন্দোলনের একটি পর্যায়ে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে যাত্রা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টিকিট বিক্রি শুরু করে রেলভবন। কিন্তু তা যাত্রার আগেই স্থগিত করা হয়। ফলে ক্ষুব্ধ মানুষ আরও ফুসে উঠে রেলপথ ও মহাসড়ক অরোধ কর্মসুচি পালন করেছে।
এ দাবিতে টানা ৮ দিন ধরে লালমনিরহাট বুড়িমারী রেলপথ অবরোধ করে রেখেছে স্থানীয়রা। ফলে বাধ্য হয়ে এ রুটের সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে বর্তৃপক্ষ। কর্মসুচির অংশ হিসেবে শনিবার হাতীবান্ধা রেলস্টেশন থেকে মশাল মিছিল করা হয়। রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের রেলপথের পাশাপাশি লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী। হাতীবান্ধা মেডিকেল মোড়ে মহাসড়কের পাশে মঞ্চ করে মহাসড়কে বসে পড়ে আন্দোলনকারীরা। এতে এ মহাসড়কের হাতীবান্ধার দুই প্রান্তে প্রায় চার কিলোমিটার পথে শতশত যানবাহন আটকা পড়েছে। বাধ্য হয়ে যানবাহনের যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে ছোট ছোট যানবাহনে যাতায়ত করেছে। বিপাকে পড়েছে বুড়িমারী স্থলবন্দের পন্যবাহি ট্রাক।
অবরোধ কর্মসুচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের সমন্বয়ক এম সাহিদুজ্জামান কোয়েল, ফিরোজ হোসেন, নিশাত ফারুক, সামসুল আলম খান বুলেট, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মহসিন আলম, রানা, তাওহীদ প্রমুখ।