স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাতো ভাই নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহীকমিটির সদস্য শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার(২৯ এপ্রিল) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুই মামলায় ঢাকার আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে ওইদিনে নীলফামারী জেলা শহরে তুহিন ভাইয়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জেলা বিএনপি ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুর ৩টার দিকে নীলফামারী জেলা শহরে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সোহেল পারভেজের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা প্রশাসন কার্যালয়, জেলা জজকোট চত্বর হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর মার্কেস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্টু, সদর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শামীম শাহ আলম তমু ও পৌর যুবদলের আহবায়ক হাসানুজ্জামান তৌহিদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মুঠোফোনে কথা হলে নীলফামারী জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জহুরুল আলম জানান, আমাদের নীলফামারী বিএনপির অভিভাবক প্রিয় নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন ভাই আদালতে আতœসোর্পনে নীলফামারী জেলা ডোমার ও ডিমলা উপজেলার শতশত বিএনপির নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান করছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত তুহিন ভাইয়ের জামিন মঞ্জুর না করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমরা দ্রুত তার জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। তার পৈতৃক বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার গোমনাতিতে। তার পিতা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও ডীন ছিলেন। তুহিনের মাতা সেলিনা ইসলাম। তার মা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সেন বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোন। সে হিসাবে তুহিন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে এবং তারেক রহমানের খালাতো ভাই। তুহিন বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য।
তুহিন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেরুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১/১১ তত্বাবধায়ক সরকারের করা একাধিক মামলার দায়ে তিনি বিদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১৮ বছর পর তিনি সম্প্রতি দেশে ফিরে রাজধানীর গুলশানের বাসভবনে উঠেন।
আইনপ্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশেষ জজ-৯ কবির উদ্দিন প্রামাণিকের আদালতে এক মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে বিশেষ জজ আদালত-৭ প্রদীপ কুমার রায় এর আদালতেও আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। উভয় আদালতই জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে আসামি পক্ষের আইনজীবী শেখ সাকিল আহমেদ রিপন নিশ্চিত করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনে সাবেক এই এমপিকে অ্যাম্বুলেন্সে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন ও চিকিৎসার নির্দেশ দেন।
সুত্র মতে, কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১/১১ পর ২০০৮ সালে সময় তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় পৃথক ওই দুটি মামলা করে দুদক। কর ফাঁকির মামলায় তাঁকে ২০০৮ সালে মোট আট বছর ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছিল আদালত।